timewatch
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, বিকাল ৩:৪২ মিনিট
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন
শিরোনাম

ছাত্র-ছাত্রীরা আমার সন্তানতুল্য, তাদের দাবি পূরণে কাজ করছি : অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ

প্রতিবেদক
এ কে নাহিদ
জুন ১৭, ২০২৩ ১২:৫৬ অপরাহ্ণ

অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ; বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত চিকিৎসক ও সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া তিনি বাংলাদেশের চিকিৎসকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব হিসেবে দেশের চিকিৎসা সেবা উন্নয়নে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ে টাইমওয়াচ প্রতিনিধিকে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। তার দেওয়া সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে উপস্থাপন করা হলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এ কে নাহিদ

টাইমওয়াচ : আপনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরই আলোকে এই পদে যোগদানের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত আপনার কর্ম-পরিধি সম্পর্কে জানতে চাইছি।
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মার্চ আমাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এরই আলোকে আমি মহান আল্লাহর নিটক শুকরিয়া আদায় করছি। পাশাপাশি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানাই; আরো কৃতজ্ঞতা জানাই সেই সময়ের চ্যান্সেলর জনাব মোঃ আব্দুল হামিদকে; তিনি তখন দেশের মহামান্য প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
আমি এখানে যোগদানের পরে দেখলাম যে, এখানে কোনো ইমার্জেন্সি বিভাগ নেই। আমি ইমার্জেন্সি বিভাগ চালু করি। আমি প্রতি মাসের প্রথম দিন সব ডিপার্টমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করি। এছাড়াও প্রতি মাসের দ্বিতীয় রবিবার সেন্ট্রাল সেমিনার করি। এতে সকল শিক্ষক ও চিকিৎসক অডিটরিয়ামে উপস্থিত হন। এই হাসপাতালে ইমার্জেন্সি না থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের ট্রেনিংয়ে অসুবিধা হচ্ছিলো। আমি ইমার্জেন্সি চালু করে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি। এখানে পূর্বে পিএইচডি কোর্স ছিল না। আমি পিএইচডি কোর্স চালু করি। অ্যাডভান্সড ফেলোশীপ চালু করি। গবেষণায় ৪ কোটি টাকার বাজেট থেকে ২২ কোটিতে উন্নীত করি। এখন নিয়মিত রাউন্ড চলে। আমি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে প্রথম উপস্থিতি চালু করি। আমি বিএসএমএমইউ যোগদান করার পর এখানকার পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় বিশেষভাবে নজর দিই। এখানের বন্ধ হওয়া টিএসসি চালু করি। ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা ছিল। এই মামলা আমি প্রত্যাহার করি। ভাঙ্গা হল মেরামত করি। এখানে ডেন্টাল ওপিডি ভবন করি। নতুন ওপিডি ১, ২ চালু করি। সেখানে ডেন্টাল অনুষদ নিই । এখানে ব্যাপক আকারে সুন্দরভাবে রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। আগে আউটডোরে ২ থেকে ৩ হাজার রোগী হতো। বর্তমানে আউটডোরে ৮ থেকে ৯ হাজার রোগী হয়।
টাইমওয়াচ : আপনি বললেন, আগের চেয়ে রোগী অনেক গুণ বেড়েছে। রোগীদের চিকিৎসা-সেবা নিশ্চিত করতে কী ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন; বলবেন কী?
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ : আমার আমলে ইনভেস্টিগেশন ফ্যাসিলিটি অনেক বেড়েছে। এখানে ফিসটেস্ট হতো না। এখন ফিসটেস্ট হচ্ছে। এখানে ইনবননের রকমেটাবলী পরীক্ষার জন্য ব্যবস্থা আছে। কলরেকটল ক্যান্সার ডিটেকশনের ব্যবস্থা আছে। আমরা ভবিষ্যতে এখানে বোনমেরো ট্রান্সপ্লান্ট করবো। এখানে রোবোটিক সার্জারি করবো। হেয়ারিং প্লান্ট করবো। স্টেমশেল থেরাপি এখানে করবো। বাংলাদেশ তথা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ বছরের ইতিহাসে কোনো ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট হয়নি। যার ব্রেন ডেথ থাকে এবং আর্টিফিসিয়াল ভেনটিলেশনের লাং হার্ট চলে তাদের ৮টা অর্গান ৮ জন লোককে দেয়া যায়। আমরা ৪ জন ব্যক্তিকে এটি দিতে পেরেছিলাম। দু’জন কিডনি ফেইলর রোগিকে দু’টো কিডনি দিয়েছিলাম। একজন ব্রেনডেথ রোগী এবং দু’জন অন্ধ রোগীকে কর্নিয়া দিয়েছিলাম। এই হাসপাতালে এক ছোট বোন তার বড় ভাইকে লিভার দিয়েছে। এরই আলোকে এখানে এই প্রথম সফলভাবে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে। আরো এগিয়ে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার উপর আস্থা রেখেছেন বিধায় আমি এই সব কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। বর্তমানে আমরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করেছি। এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা চলছে। এখানে ইসভেসটিগেশন চলছে। খুব শিগরিই ওটি, ইনডোর চালু হবে। কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রণাংশ দেশের বাইরে থেকে আসতে বিলম্ব হওয়ায় এখনো শুরু হয়নি। তবে আমরা এই মাস থেকে ওটি, ইনডোর শুরু করতে চাই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব জিনিস ছিল না, আমি সেগুলো বাস্তবায়ন করেছি। প্রতি বছর এখানে ১ হাজারের বেশি রোগীর অপারেশন হয়। ইনডোরে ২ হাজার রোগি ভর্তি থাকে। প্রতিদিন ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার রোগী আউটডোরে আসে। আমি এখানে ইনটারন্যাশনাল কোর্সে শেখ রাসেল ডরমেটরি করেছি। কনভেনশন হল ৬ বছর যাবৎ বন্ধ ছিল। এটি আমি পুনরায় চালু করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এগুলোর নামকরণ করেছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা কনভেনশন হল এবং শেখ রাসেল ডরমেটরি। আমি এখানে একটি ফোয়ারা করেছি। আমার প্লান আছে যে, এখানে একটি গেট বানাবো। একটি প্রেস বানাবো। এখানে ইন্টারকানেকশন করবো। আউটডোর থেকে সুপার স্পেশালাইজড পর্যন্ত উপর দিয়ে কানেকশন থাকবে। আমি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের রোবোটিক সার্জারি, বোনমেরু ট্রান্সপ্লান্ট, স্টেমশেল থেরাপি, হেয়ারিং প্লান্ট চালু করলে আশা করি দেশের মানুষের কোটি কোটি টাকা বেঁচে যাবে; যারা বিদেশে গিয়ে এসব ট্রিটমেন্ট নিয়ে থাকেন। তারা এখান থেকে ট্রিটমেন্ট নিতে পারবেন। ক্যান্সার ও ইনফার্টিলিটির জন্যও অনেকে বিদেশে যায়। এগুলোর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা এখানে চালু করবো। বাংলাদেশের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার যোগদান করার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সব কাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করছি। আমাদের শিক্ষা-সেবা এবং গবেষণা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। আমি মনে করি, গবেষণায় এই বিশ্ববিদ্যালয় সবার চেয়ে উপরে অবস্থান করছে। আমরা জিনোম সিকুয়েন্স করি, এন্টিবডি সেনসিটিভিটি দিই এবং ভবিষ্যতে ক্যান্সার প্রিভেন্টে ভ্যাকসিন করবো। এগুলো আমার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চাওয়া।
টাইমওয়াচ : এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতে গিয়ে আপনি কোনো ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন কী?
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ : বর্তমানে বিভিন্ন মহল সরকার বিরোধী বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করতে চায়। এরই প্রেক্ষিতে আমি লক্ষ্য করছি, বেশ কিছুদিন ধরে এখানে বিভিন্ন মিটিংয়ে সরকার বিরোধী বক্তব্য রাখছে। বিভিন্ন পেশা বিশেষ করে চিকিৎসক ও ছাত্রদের মধ্যেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। কয়েকদিন আগে দেখলাম, যারা বিএনপির সময়ে এই হাসপাতালে যোগদান করেছে তাদের অনেকেই এখন প্রফেসর হতে চায়। আমার এখানে চাকরিতে যোগদান করতে বয়স নির্ধারণ ৩৫ বছর পর্যন্ত করতে আন্দোলন করছে। অনেকেই ভাতা বৃদ্ধির আন্দোলন করছে।
টাইমওয়াচ : ভাতা বৃদ্ধির জন্য আপনি কী ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন?
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আগে আমাদেরকে কোনো ভাতা দেওয়া হতো না। আমরা যারা এমএস করেছি; সেসময়ে আমাদেরকে কোনো ভাতা দেয়া হতো না। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয় এবং ভাতাও দেয়া হয়। শেখ হাসিনা প্রথমে মাসিক ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দিতেন। বর্তমানে ২০ হাজার টাকা করে দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা এই ভাতা আরো বৃদ্ধির দাবি করছে। এই ভাতা বাড়লে আমিও খুশি হবো। ছাত্র-ছাত্রীরা আমার সন্তানের মতো। আমি চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহানুভ‚তির সঙ্গে তাদের দাবি বিবেচনা করুক। এই ভাতা বা বৃত্তি সরকার ইচ্ছ করে দিয়ে থাকেন। যদি সরকার না চায়, তাহলে নাও দিতে পারেন। কারণ যখন ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে ভর্তি হয় তখন কেউ বলে না যে সে টাকার বিনিময়ে পড়বে। কোথাও কারো লিখা নেই যে, আমি পড়তে আসছি, এমএস এ ঢুকবো টাকা না দিলে আমি পড়বো না। তারপরও আমরা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সুবিধা দিয়েছি। সুবিধা অটুট থাকুক; এটি আমিও চাই।
টাইমওয়াচ: শিক্ষার্থীদের এভাবে আন্দোলন করা কতটুকু যৌক্তিক বলে আপনি মনে করেন?
অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ : আমি মনে করি, লেখাপড়া বাদ দিয়ে আন্দোলন করা ঠিক নয়। সরকার তাদের দাবি পূরণ করলে আমি খুশি হবো।

সর্বশেষ - ধর্মতত্ত্ব