জীবন ফিরে পেয়েছে চাঁদের মাটিতে উল্টো হয়ে পড়ে থাকা জাপানের চন্দ্রযান স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন (এসএলআইএম) ।
জাপান এ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জেএএক্সএ) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রবিবার রাতে ল্যান্ডারের সাথে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন করেছে তারা। সেই সঙ্গে ওই যানে যে ত্রুটি ছিল তাও ঠিক করা হয়েছে।
জেএএক্সএ জানায়, আলোর অবস্থার পরিবর্তনের পর চন্দ্রযানটি সৌর কোষগুলো আবার কাজ করতে শুরু করছে।
গত ২০ জানুয়ারি চাঁদের মাটিতে অবতরণের পর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছিল না চন্দ্রযানটি। কারণ এর সৌর কোষগুলো সূর্য থেকে উল্টো দিকে পড়েছিল।
চাঁদে পৌঁছানো পঞ্চম দেশ হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে জাপান। তবে চাঁদে পৌঁছানোর ১০ দিনেও অনুসন্ধানের কাজ শুরু করতে পারছিল না জাপানি চন্দ্রযানটি। এমনকি নিজেকে সক্রিয় রাখতে চার্জও গ্রহণ করতে পারছিল না এটি। সমস্যার কারণ হিসেবে জানা যায়, চাঁদের মাটি স্পর্শ করলেও নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে ছিল না জাপানি চন্দ্রযান এসএলআইএম। কারণ অবতরণের সময় চাঁদের মাটিতে উল্টো হয়ে পড়েছে এটি।
জানা যায়, চাঁদের মাটি ছোঁয়ার ৩ ঘণ্টা পর চন্দ্রযানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় জাপানের। একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এই মহাকাশযান।
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পাঠানো লুনার রিকোনাইসেন্স অরবিটার ইতোমধ্যেই ল্যান্ডারের অবস্থান চিহ্নিত করতে সফল হয়েছে। তাদের তথ্য বলছে, চাঁদের বুকে উল্টো হয়ে পড়ে আছে এটি। স্লিম যখন চাঁদের মাটি স্পর্শ করে তখন তা রোবট ল্যান্ডার থেকে আলাদা হয়ে যায়। সর-কিউ নামের রোবট ক্যামেরায় ছবি তুলে জানায়, চাঁদের মাটিতে উল্টো হয়ে পড়ে আছে যানটি। তাই সৌর প্যানেলে সূর্যের আলো পৌঁছতে পারছে না।
জাপান এ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জেএএক্সএ) জানিয়েছে, এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মূল ইঞ্জিনটির উপর প্রভাব পড়েছে। যে কারণে সৌর প্যানেলগুলো চার্জ হচ্ছে না। তবে ব্যাটারি পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত যে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছিল যানটি, যে যে ছবি তুলেছিল, সেগুলো হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন জেএএক্সএ’র বিজ্ঞানীরা।
তবে চাঁদের বুকে চন্দ্রযানটি উল্টো হয়ে পড়লেও আশা ছাড়েননি জাপানের বিজ্ঞানীরা। তারা দাবি করে, সূর্যের আলো সৌর প্যানেলের উপর এসে না পড়া পর্যন্ত ঘুমে থাকবে এসএলআইএম। কোনাকুনি সূর্যরশ্মি এসে পড়লেই আবার প্রাণ ফিরে পাবে যানটি। চার্জ গ্রহণের পর এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে পুনরায় নিজের পায়ে দাঁড় করানো যাবে বলে আশাবাদী ছিল বিজ্ঞানীরা। সূত্র: বিবিসি