বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা আর রাস্ট্রীয় মর্যাদায় কানাডার টরেন্টোতে সমাহিত হয়েছেন বিশিষ্ট জনপ্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী।
কানাডার সর্ববৃহৎ শহর টরন্টোর স্থানীয় সময় ৬ অক্টোবর ২০২৩ শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় অন্টারিওর ‘ডাফিন মিডোস কবরস্থানে’ কবিকে দাফন করা হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কবির কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. খলিলুর রহমান।
এর আগে জুম্মার নামাজের পর ইসলামিক ফাউন্ডেশন অব টরন্টো জামে মসজিদে কবি আসাদ চৌধুরীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।পরে কবির মরদেহ সর্ব সাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মসজিদের ভেতরে রাখা হয়। জানাজার পূর্বে কবির কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ সময় টরেন্ট ছাড়াও আশপাশের অনেক শহর থেকে বাংলাদেশী প্রবাসীরা সেখানে ভিড় জমান। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে লিখিত শ্রদ্ধাঞ্জলী পাঠ করেন রাষ্ট্রদূত খলিলুর রহমান।
এর আগে কবির জামাতা নাদিম ইকবাল জানিয়েছেন, পরিবারের সদস্যরা চেয়েছেন কানাডাতেই যেন দাফন করা হয়।
তিনি বলেন, “উনার পরিবারের সদস্যরা কেউ দেশে থাকেন না। এজন্য পরিবারের সবাই চেয়েছেন কানাডাতেই যেন দাফন করা হয়।”
কবির জানাজায় উপস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও লেখক তাজুল মোহাম্মদ জানান, কবি আসাদ চৌধুরী ছিলেন একাত্তরের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের উজ্জল নক্ষত্র। তাঁর মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি অভিভাবক।
বাংলাদেশি কানাডিয়ান অনুজীব বিজ্ঞানি ড. সোয়েব সাঈদ জানান, কবি আসাদ চৌধুরী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রাণ।
বাংলাদেশি কানাডিয়ান ব্যবসায়ী সামিমুল হাসান জানান, বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদান রেখেছেন কবি আসাদ চৌধুরী। এমন একজন কবি পরবর্তী প্রজন্মে আর ফিরে আসবেনা।
উল্লেখ্য, টরন্টোর স্থানীয় সময় বুধবার(৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে মারা যান কবি আসাদ চৌধুরী। গেল বছরের নভেম্বরে ব্লাড ক্যন্সার ধরা পড়ে কবির শরীরে। প্রায় তিন সপ্তাহ হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার কানাডার অশোয়া শহরের লেক রিজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগে করেন খ্যাতিমান কবি আসাদ চৌধুরী।
আসাদ চৌধুরীর দুই ছেলে ও এক মেয়ের সবাই কানাডায় বসবাস করেন।
১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার মেহেন্দিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন আসাদ চৌধুরী। প্রথম কবিতার বই ‘তবক দেওয়া পান’ এ পরিচিতি পান কবি আসাদ চৌধুরী।
১৯৮৭ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান তিনি। ২০১৩ সালে পান একুশে পদক।