১৮ নভেম্বর ২০২৫, এখন সময় সকাল ১১:৫৫ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে বাদ দিয়ে দেশ নয় : ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

প্রতিবেদক
ডেস্ক রিপোর্টার
আগস্ট ৬, ২০২৪ ১২:২৫ অপরাহ্ণ

কোনো দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক তথা সার্বিক উন্নয়নের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, সুষ্ঠু পরিবেশের ওপরই উন্নয়ন নির্ভর করে। আর সুষ্ঠু পরিবেশ বলতে বোঝায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ও ইতিবাচক পরিবেশ বজায় থাকা, যা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানীরাও এ বিষয়ে একমত হবেন যে এটি সবচেয়ে বেশি অপরিহার্য সার্বিক উন্নয়নের জন্য। অনেক দেশই সামষ্টিক সূচকে উন্নতি করেছে। কিন্তু টেকসই না হওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রায় বিরূপ প্রভাব পড়ে। দেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে সার্বিক পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করে আমাদের এগোতে হবে।
বহুদিন থেকে বলা হচ্ছে আমরা উন্নয়নের মাইলফলক স্পর্শ করেছি। এ কথা অবশ্যই অস্বীকার করার উপায় নেই। বিশেষ করে গত ৩০ বছরে আমরা বেশকিছু ক্ষেত্রে উন্নতি করেছি। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের পথে যাত্রা করছি। কিন্তু সার্বিক উন্নয়নের কথা যদি বলা যায়, যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, মানুষের জীবনযাত্রার মান সবকিছুই প্রশ্নবিদ্ধ। বাংলাদেশে আয়ের বৈষম্য ও সম্পদের বৈষম্য দিন দিন বেড়ে চলছে। অনেকেই বলে থাকেন, বাংলাদেশ হচ্ছে অসম উন্নয়নের দেশ। আমাদের উন্নয়ন সুষম ও সমতাভিত্তিক হয়নি। সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এর জন্য দায়ী। কেবল কিছু অর্থনৈতিক নীতি কৌশলের মাধ্যমে সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের অর্থনৈতিক চাপ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। বহির্বিশ্বের নানামুখী সংকটের কাঁধে সেসব দায় চাপানো হয়েছে। প্রথমে বলা হলো করোনা মহামারী, তারপর এল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং সবশেষ গাজা যুদ্ধের ওপর দোষ চাপানো হলো। কিন্তু আমাদের সংকট যতটা না বাইরের কারণে, তার চেয়ে বেশি অভ্যন্তরীণ কারণেই। আর অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলো দিন দিন জটিলতর হচ্ছে। এটা যদি আমরা এখনো অনুধাবন না করি তবে আগামীতে আরো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হবে। উন্নয়নশীল অনেক দেশ কিন্তু ১৫-২০ বছর ধরে এক জায়গায় আটকে রয়েছে। আবার এমন অনেক নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ আছে যারা ২০-৩০ বছর এক জায়গায় আটকে আছে। আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার অনেকগুলো দেশের অবস্থা এমন। তাদের এ পরিস্থিতির পেছনে সেসব দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার দায় রয়েছে। সেখানে মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র নেই; সামাজিক বৈষম্য প্রকট। তাদের অনেক খনিজ সম্পদ ও জ্বালানির মজুদ রয়েছে। কিন্তু অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তার পুরো সুবিধা ঘরে তুলতে পারছে না, বরং বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
অল্প কিছু দেশ অবশ্য উন্নয়নশীল দেশের ফাঁদ এড়িয়ে উন্নত দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সিঙ্গাপুর। আরো কয়েকটি দেশ বেশ অগ্রগতি সাধন করেছে; যেমন ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। উল্লিখিত সব দেশেরই রাজনৈতিক অনেক সমস্যা ছিল। সেসব দেশ তা সমাধান করেছে বা সমাধানের চেষ্টায় আছে। কিন্তু আমাদের যেসব সমস্যা আছে তা সমাধানে কোনো মনোযোগ নেই। সমস্যাগুলো ধামাচাপা দিয়ে কোনো রকম সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি খুবই নাজুক। মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, রফতানিসহ অর্থনীতির সব খাতেই আমাদের বেহাল অবস্থা। অন্যদিকে পুঁজিবাজারে তো আরো খারাপ অবস্থা। যদিও সরকারি পরিসংখ্যানগুলোয় এসব খাতকে ভালো দেখানো হচ্ছে। পরিসংখ্যানগুলোয় অনেক গরমিল লক্ষ করা যাচ্ছে। রফতানির পরিসংখ্যানে গরমিলের পর কয়েকদিন আগে দেখা গেল, আমাদের রাজস্ব আয়ের উপাত্তেও বড় ধরনের গরমিল রয়েছে। এসব কিন্তু সত্যিকারের উন্নয়নের পরিচায়ক নয়। সরকার বলছে প্রথমে উন্নয়ন হোক, গণতন্ত্র পরে দেখা যাবে। কিন্তু এ যুক্তি এখন আর ধোপে টিকছে না। আমাদের প্রকৃত উন্নয়নও হচ্ছে না। আবার গণতন্ত্রের অবস্থা কেমন এটা তো সবাই দেখছে।
আমাদের আর্থিক খাতের দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখব, সেখানে নানা সমস্যা বিরাজ করছে। আর মনে রাখতে হবে, আর্থিক সংকট সংক্রামক ব্যাধির মতো, সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩০-এর দশকের মহামন্দা ও আবাসন খাতে শুরু হওয়া বিপর্যয় আর্থিক খাতে ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৭-০৮ সালে যে বিশ্বমন্দা দেখা দিয়েছিল তা দ্রুত অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। এখনো তার রেশ রয়ে গেছে। আমাদের এখানেও যদি আর্থিক খাতে একটি সংকট দেখা দেয় তা কিন্তু অন্যান্য খাতেও ছড়িয়ে পড়বে।
অর্থনৈতিক সংকট থাকলে মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসাসহ মৌলিক বিষয়গুলো পূরণ করা যাবে না। একটা কথা আছে, মন্দ জিনিস দ্রুত ছড়ায় কিন্তু ভালো জিনিস ছড়াতে সময় লাগে। আমাদের অর্থনীতিতে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার করতে সময় লাগবে। আরেকটি কথা বলা দরকার, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হলো তখন কিন্তু সবাই নেমেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে। দেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে তখন সবাই স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিয়েছিল। বিশেষ করে এনজিওদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এক্ষেত্রে ব্র্যাক একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। সরকারের পাশাপাশি অনেক এনজিও দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছিল। শুধু একটি দলের সরকার দেশের সব ভালো কাজ করেছে এটা সত্য নয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী বেশ কয়েকটি সরকারের অবদান রয়েছে এতে। সর্বস্তরের জনগণ ও সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে সুষম উন্নয়ন হবে না।
সাম্প্রতিক অস্থিরতার ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আর অনিশ্চয়তা থাকলে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিদেশী অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যে আগ্রহী হবেন না। বড় বড় ব্যবসায়ী তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই, ছোট ছোট অনেক ব্যবসায়ী পথে বসার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ অনিশ্চয়তা দূর করে সবার মনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে। সব পক্ষকে সহনশীল ও আরো দায়িত্বপরায়ণ হতে হবে। দ্বিধাবিভক্তি থাকলে টেকসই ও সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হবে না। মানুষের কল্যাণের জন্য আমাদের উন্নয়ন কৌশলকে আরো পরিশীলিত করতে হবে এবং মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।
সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা, সততা ও নিষ্ঠা সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমলাদের ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে। যতটুকু অনিয়ম প্রকাশ পাচ্ছে তার চেয়ে বেশি অনিয়ম ও দুর্নীতি ভেতরে আছে। এ বিষয়গুলো সরকারকে অনুধাবন করতে হবে। অনেকেই রাজনৈতিক বক্তব্যে দেশের স্বার্থে সবকিছু করার কথা বলে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, দেশ মানে মানুষ। মানুষের স্বার্থে কাজ করলে দেশের স্বার্থে কাজ করা হয়। মানুষকে বাদ দিয়ে দেশ নয়। দেশ বিমূর্ত কিন্তু মানুষ মূর্তমান জিনিস। আমরা যদি এটা ঠিকভাবে অনুধাবন না করি তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। সূত্র : বণিক বার্তা
লেখক : সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক

সর্বশেষ - আইন-আদালত

আপনার জন্য নির্বাচিত

৪ বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

জামাত-শিবির ও বিএনপির জঙ্গিরা আমাদের ওপর থাবা দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় এখনই

ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না : অর্থ উপদেষ্টা

চার বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনে দুই শতাধিক নিহত অসংখ্য মানুষ আহত দায় কার?

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজ সরকারের ইন্তেকাল

আইনশৃঙ্খলাজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত : আইজিপি

Shahjada Sayed Saifuddin Ahmed Maizbhandari awarded honorary doctorate degree

আগামী নির্বাচন নির্বাচন ভন্ডুল করতে চাইলে পরিণতি ভয়াবহ হবে : নৌপ্রতিমন্ত্রী