১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, এখন সময় সকাল ৬:০২ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

এসএমই বান্ধব ইকো-সিস্টেম নিশ্চিতের আহ্বান ডিসিসিআই সভাপতি’র

প্রতিবেদক
স্টাফ রিপোর্টার
অক্টোবর ৮, ২০২৩ ৩:০১ অপরাহ্ণ

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার বলেছেন, বাংলাদেশের এলসিডি উত্তরণ পরবর্তী সময়ে ২০২৬ সাল হতে আমাদের এসএমই সহ রপ্তানিকারকদের পণ্য রপ্তানিতে অধিক শুল্ক প্রদান করতে হবে, যা ৮-১৬ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তিনি জানান, দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যেক্তাবৃন্দের জিডিপিতে অবদান ২৮ শতাংশ এবং বেসরকারিখাত স্থানীয় কর্মসংস্থানের প্রায় ৯০ শতাংশের সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে। ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের এসএমইরা ব্যবসায় পরিচালনায়, মূলধন স্বল্পতা, অবকাঠামো, প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও মানবসম্পদের স্বল্পতা, পণ্য রপ্তানিতে বৈশ্বিক বাজারের সাথে যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা এবং কমপ্লায়েন্স সহ নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। বাংলাদেশের এসএমইদের উন্নয়ন ও এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আর্থিক ও নীতিসহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এসএমই’র সংজ্ঞায় সংশোধন, বিশেষকরে মাঝারীকে পৃথকীকরণ, রপ্তানি উন্নয়ন ফান্ড প্রবর্তন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে প্রশিক্ষণ প্রদান, ডাটাবেইজ তৈরি, বাজার সম্প্রসারণে বর্হিবিশ্বে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলা ও পণ্য প্রদর্শনীসমূহে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরনের উপর জেরারোপ করেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার।

০৭ অক্টোবর ২০২৩ রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলেঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত “এসএমইদের রপ্তানির সক্ষমতা বৃদ্ধি; এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীঅনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান উক্ত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।

তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সহজে ঋণ প্রাপ্তি, পণ্যের বাজারজাতকরণ ও বহুমুখীকরণ, গবেষণা ও উদ্ভাবন, ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট, অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়সমূহ বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের বিকাশে অতীব জরুরী বলে মত প্রকশ করেছেন ডিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারের আলোচকবৃন্দ।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জিডিপিতে এসএমইদের অবদান প্রায় ৩০%, যদিও তারা নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে এবং এ সমস্যা নিরসনে আমাদের নীতিনির্ধারকদের নীতি সহায়তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, এসএমইদের জামানতবিহীন ঋণ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তবে এ বিষয়ক তথ্যাদির যথাযথ প্রচার-প্রচারণার অভাবে কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ই-কমার্স এবং সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্য বেচা-কেনায় সুবিধা নিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক সক্ষমতা বাড়ানোর উপর তিনি জোরারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে সরকার প্রবর্তিত ‘জয়িতা ফাউন্ডেশন’-এর ব্যবহার করার আহ্বান জানান। স্পিকার আরো বলেন, এসএমইদের সার্বিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস’-এর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরী। তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের নারী উদ্যোক্তারা বর্তমানে জামানতবিহীন ১০ লক্ষ টাকার ঋণ সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন। এছাড়াও এসএমইদের রপ্তানির পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান নির্ধারিত শুল্ক হার হ্রাসের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলাস বলেন, বাংলাদেশের কারিগরি ও ভোকেশন্যাল শিক্ষা ব্যবস্থা ও রপ্তানির উন্নয়নে কানাডা সরকার একযোগে কাজ করছে। বাণিজ্য সম্প্রসারণে সম্ভাবনাময় দেশসমূহের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের প্রতি তিনি জোরারোপ করেন। হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের এসএমই খাতের উদ্যোক্তাবৃন্দের আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, বাজার সম্প্রসারণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরো বেশি হারে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উপর তিনি জোররোপ করেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, কোভিড মহামারীর সময়কালে সৌদি সরকার এসএমই উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সহায়ক নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, নীতি সংষ্কার ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকরণ। তিনি জানান, বাংলাদেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য, কারণ ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারাই সবচেয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে থাকে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের রয়েছে বহুমুখী ও শক্তিশালী রপ্তানিমুখী পণ্য সম্ভার এবং এদেশের উৎপাদিত পাটজাতপণ্য, চিংড়ি, ঔষধ, তৈরি পোষাক প্রভৃতির বর্হিবিশে^ যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ সময়ে শিক্ষা তথ্য-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন খাতে আরো বেশি হারে বিনিয়োগ বাড়ানোর উপর রাষ্ট্রদূত জোরারোপ করেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেম’র নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, এলডিসি পরবর্তী সময়ে আমাদের এসএমইখাতের উদ্যোক্তারা প্রধানত সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, আর্থিক ও নীতি সহায়তা, যথাযথ অবকাঠামো এবং দক্ষ মানবসম্পদের স্বল্পতার মুখোমুখি হবেন। এমতাবস্থায়, কার্যকর দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচী প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, আর্থিক ও নীতি সহায়তা প্রদান, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন, আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী শ্রম আইনের সংশোধন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, অবকাঠামো খাতের টেকসই উন্নয়ন সহ নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মেগা প্রকল্পসমূহের কার্যক্রম বাস্তবায়নের আহ্বান জানান সানেম নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় তরঙ্গ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর ইয়াসমিন, পিপলস লেদার ইন্ডাস্ট্রি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজবিন বেগম, বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম আসিফ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (এসএমই-এসপিডি) ড. মোঃ কবির আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মোঃ জুনায়েদ ইবনে আলী সহ পর্ষদের সদস্যবৃন্দ উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

সর্বশেষ - আইন-আদালত