দেশের কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বাধ্য হয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চপর্যায়ের এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব কথা বলেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিসহ নানা বিষয় নিয়ে এর আগে বৈঠকে বসেন সাত মন্ত্রী।
কোটা আন্দোলন ঘিরে কী পরিমাণ গুলি ব্যবহার করা হয়েছে, এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুবই ধৈর্যের সঙ্গে ধ্বংসযজ্ঞের মোকাবিলা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। একেবারে না পেরে সেনাবাহিনীকে আসতে হয়েছে। যেখানে না পেরেছে, সেখানে জীবন ও সম্পদ রক্ষায় গুলি করতে বাধ্য হয়েছে। সব হিসাব পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাখেন। কোনো একটি গুলি, কোনো একটি মৃত্যু যদি অনাকাঙ্খিত হয়, তাহলে একটা তদন্ত হয়, সেটা হবে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিচার বিভাগীয় কমিশন হয়েছে। তারাও একটি প্রতিবেদন দেবে কী ঘটনা ঘটেছিল কয়েক দিনে। তখন আমরা সারা বিশ্বকে জানাতে পারব কী ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি’। তিনি আরো বলেন, অনেকেই বলছেন আমরা গণগ্রেপ্তার করছি। কোনো গণগ্রেপ্তার আমরা করছি না। গোয়েন্দা তথ্য, ভিডিও ফুটেজ, সাক্ষী সাবুদ নিয়ে যাদের আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদেরই গ্রেপ্তার করছি। ভুলক্রমে যদি কেউ নিয়ে আসে থানায় আমাদের অফিসাররা তাদের চেক করে যদি মনে করেন তিনি নিরপরাধ তাকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সারা দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করেছি? সারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। ৩১ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এছাড়া কবে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে সেটি শিক্ষামন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন যে, কবে থেকে পরিপূর্ণভাবে ইন্টারনেট চালু হবে।
এদিকে বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী জানিয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা চিন্তা করছি। এইচএসএসি পরীক্ষা কখন হবে, সেটিও যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। বেসরকারি কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাসের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। অনলাইনে ক্লাস শুরু করা যায় কি না সেটি আমরা যথাসময়ে জানিয়ে দেব।
বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আলোচনায় যোগ দেন।