চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর অর্থাৎ এই তিন মাসে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে ৬ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা, যা পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার ১৭ শতাংশ। আগের বছরের এই সময়ে বিতরণ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ২৫ শতাংশ, যা টাকার অংকে ৮ হাজার ৮২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। জুলাই-সেপ্টেম্বর অর্থাৎ এই তিন মাসে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছিল নয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৪১ কোটি ৪২ লাখ টাকা কম ঋণ বিতরণ হয়েছে।
অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কৃষি ঋণ প্রবাহের এ নিম্নগতির জন্য পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের বন্যা এবং ব্যাংকগুলোর তারল্য কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন একাধিক ব্যাংকের কৃষি ঋণ সম্পর্কিত কর্মকর্তা। তারা বলছেন, আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ফসলের মাঠ তলিয়ে যায়। এতে কৃষি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। আর জুলাই-আগস্টে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যাংকগুলোও কৃষি ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। এই সময় বেশ কয়েকটি ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়ে। এসব কারণে কৃষি ঋণ বিতরণ ব্যাহত হয়।
দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের মোট ঋণের কমপক্ষে ২ শতাংশ হারে কৃষি ঋণ বিতরণ করছে। এসব কৃষি ঋণ ব্যাংকগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বিতরণ করতে হয়। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষি ঋণ বিতরণ করতে পারে না, বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা সেসব ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে অনর্জিত লক্ষ্যমাত্রার একটি নির্দিষ্ট অংশ কেটে নেওয়া হয় এবং অন্য ব্যাংক দিয়ে বিতরণ করা হয়। খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ২০১০ সাল থেকে সরকার কৃষকের মাঝে অর্থ সরবরাহের লক্ষ্যে প্রত্যেক ব্যাংকের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয়।
চলতি বছরের আগস্ট মাসে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে এলেও কৃষি ঋণ বিতরণে একই নীতি বহাল রাখে। পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ অব্যাহত থাকে। সব ব্যাংক যাতে কৃষি ঋণ বিতরণ করে, সেজন্য নজরদারি জোরদারের নির্দেশ দেন বর্তমান কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর।