মহান ১২ রবিউল আউয়াল ও পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হতে আঞ্জুমানে রহমানিয়ার মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সভাপতি ও বিএসপি চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বে লাখো নবীপ্রেমী সুফিবাদী জনতার অংশগ্রহণে জাক-জমকভাবে জশনে জুলুস র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে মানুষের ঢল নামে। ৬ সেপ্টেম্বর সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিলসহ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমবেত হন লাখো মানুষ। বিভিন্ন মাজার ও খানকার প্রতিনিধিদের নেতৃত্বে আলাদা আলাদা মিছিল যুক্ত হয় এই জশনে জুলসে।
এবার সবচেয়ে বড় জশনে জুলসের আয়োজন করেছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির আঞ্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভান্ডারীয়া কর্তৃপক্ষ। উৎসবমুখর এ আয়োজনে ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লাখো ধর্মপ্রাণ সুফিবাদী জনতা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমবেত হন। এবার ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) ১৫০০ বর্ষপূর্তিতে মানুষের মধ্যে ছিল ব্যপক উচ্ছ্বাস ও উদ্ধিপনা।
শোভাযাত্রার অগ্রভাগে বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী সালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসূল সালামু আলাইকা’। অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও বিশাল জাতীয় পতাকা বহন করে রাজধানীর রাস্তাঘাট মুখরিত করে তোলেন। চারদিকে ধ্বনিত হতে থাকে নারায়ে তাকবির ও নারায়ে রিসালতের স্লোগান। শান্তি সমাবেশে নারীদেরও অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে হযরত শাহসুফি ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী বলেন, মহানবী (দ.) সমগ্র মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণ, ন্যায়ভিত্তিক ও কল্যাণকর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। রাসূলুল্লাহ (দ.) আমাদের সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিকতার দীক্ষা দিয়েছেন। অথচ আজ পৃথিবী জুড়ে চলছে যুদ্ধ-বিগ্রহ, সন্ত্রাস ও অমানবিকতা। স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো- প্রিয় নবীর শিক্ষা বাস্তবায়ন। এ সময় মহানবী (সা.) এর স্মরণে বিভিন্ন নাতে রাসুল পরিবেশন করা হয়।
জুলুসটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কালী মন্দির গেট দিয়ে বের হয়ে দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন ও কদম ফোয়ারা হয়ে পুনরায় কালী মন্দির গেট দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করে শান্তি সমাবেশে মিলিত হয়। পীরজাদা মুফতী মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল-আযহারীর সঞ্চালনায় সমাবেশে অতিথি ও আলোচক ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মহাসচিব আল্লামা প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ আল মারুফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আ.ন.ম মাসউদ হোসাইন আল কাদেরী, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত এর সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী মাওলানা গিয়াস্ উদ্দিন আত-তাহেরী, বিশিষ্ট কালামিস্ট ফরহাদ মাজহার, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব ও বিএসপি সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মহসীন চৌধুরী, গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সলর অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা শাহজাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও মইনীয়া যুব ফোরামের সভাপতি শাহজাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা রুহুল আমিন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার কেন্দ্রীয় সহসভাপিত মো: কবির চৌধুরী, মহাসচিব মোঃ আলমগীর খান, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মানিক প্রমুখ।