কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে অভিযান চালিয়ে অনলাইন গেমিং ও জুয়ায় আসক্ত ১১৩ কিশোরকে আটক করে প্রাথমিকভাবে অভিভাবকের জিম্মায় দিয়েছে কুড়িগ্রাম পুলিশ। সচেতনতা সৃষ্টি করতে বুধবার সন্ধ্যায় জেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজের মাঠ ও অলি-গলি থেকে তাদের আটক করা হয়।
কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মো: মাহফুজুল ইসলাম জানান, গোটা জেলায় কিশোর-তরুণদের অনলাইন গেমিং ও জুয়ায় আসক্তি প্রতিরোধে প্রায়োগিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। গতকাল পুলিশের কয়েকটি টিম টহল অভিযান চালিয়ে এসব কিশোরকে আটকের পর সমাজসেবা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তাদের বাবা-মা ও অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা জুড়ে কিশোর-তরুণরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে সন্ধ্যার পর নেতিবাচক মোবাইল আসক্তি, অনলাইন গেমিং, জুয়া, লুডুসহ নানাবিধ নেতিবাচক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন থেকে সমাজ সচেতন মানুষজন করে আসছিলেন বিভিন্ন সভা সেমিনারে। এ নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে নেতিবাচক এসব কিশোর কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রায়োগিক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে সমাজসেবা অফিসার, প্রবেশন অফিসারদের সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে বুধবার সন্ধ্যার পরে পুরো কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্কুল কলেজের ফঁাকা মাঠ ও অলিতে গলিতে যৌথ টহল কার্যক্রম পরিচালনা করে পুলিশ। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম থানা টহল পার্টি ২১ জন, রাজারহাট থানা ৪২ জন, রাজিপুর থানা ১৭ জন, চিলমারী থানা ০৫ জন, ফুলবাড়ী থানা ১২ জন, উলিপুর থানা ০৪ জন, কচাকাটা থানা ০৬ জন এবং রৌমারী থানা ০৬ জনসহ মোট ১১৩ জন কিশোর আটক করতে সক্ষম হয়। পরে আটককৃতদের অভিভাবকদের সংশ্লিষ্ট থানায় ডেকে সচেতন করা হয় এবং প্রবেশন অফিসারের মাধ্যমে সকল কিশোরদের নিজ নিজ অভিভাবকদের জিম্মায় প্রদান করা হয়।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুড়িগ্রামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু বলেন, কিশোর-তরুণদের অনলাইন গেমিং ও জুয়ায় আসক্তি প্রতিরোধ করতে জনসচেতনার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। পিতা-মাতাসহ সমাজের সকল স্তরে এসব অনলাইন ভিত্তিক জুয়া আসক্তি প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে রাষ্ট্রকেই যুগোপযোগী পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে কাউকে আটক করে ছেড়ে দেওয়া আইনের অপপ্রয়োগ করা হবে। আর এভাবে আটক করার কারণে তাদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।