৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, এখন সময় ভোর ৫:২০ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

টানা গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টি, অব্যাহত থাকবে তিন-চার দিন

প্রতিবেদক
রুপম আক্তার
জুলাই ২, ২০২৪ ১১:৫৩ অপরাহ্ণ

টানা গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমের কারণে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল। ঘরে-বাইরে গরমে অস্বস্তিকর গুমোট পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। এ অবস্থায় গরমের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সারা দেশে নেমেছে স্বস্তির বৃষ্টি। আকাশজুড়ে মেঘের গর্জন ও ঝড়ো হাওয়ার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। ফলে ভ্যাপসা গরম কমে যাওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে জনজীবনে। যদিও টানা বৃষ্টিতে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়েছেন ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ। বৃষ্টির কারণে অনেকেই সময় মতো অফিসে পৌঁছাতে পারেননি।
এদিকে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে ঢাকার আকাশ। দেখা মেলেনি সূর্যের। থেমে থেমে চলছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আবার কোথাও কোথাও মুষলধারে। এতে ভ্যাপসা গরম কিছুটা কমলেও বিপাকে পড়েছেন রাজধানীবাসী। সকাল থেকে এইচএসএসি পরীক্ষার্থীরা পড়েন বিপাকে। বেশি সময় হাতে নিয়ে বের হয়েও কেন্দ্রে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়েছে তাদের। যানবাহনের জন্য তাদেরও গুনতে হয়েছে বাড়তি ভাড়া। সকালে বৃষ্টির কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় জীবিকার তাগিদে সড়কে বের হওয়া শ্রমজীবী-কর্মজীবী এবং অফিসগামী মানুষদের। বৃষ্টির মধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় কাঙ্ক্ষিত যানবাহনের জন্য। বৃষ্টির কারণে রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার ভাড়া অতিরিক্ত নেয়ার অভিযোগ করেন যাত্রীরা। অনেকটা বাধ্য হয়েই বেশি টাকা দিয়ে যেতে হয় তাদের। আবার যানবাহন না পাওয়ায় নির্দিষ্ট সময়ে স্কুল-কলেজে পৌঁছাতে ছাতা হাতে পানি পেরিয়ে হেঁটেই যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
আজ আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা দেশের সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। তবে বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
আজ দেশের সর্বনিম্ন ২৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বান্দরবানে। আজ সকালে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বাড়তি অংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এ ছাড়া মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে সিলেটে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এ সময় ঢাকাসহ দেশের বেশ কিছু স্থানেই ঝড়বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা দেশের সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

তবে বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গায় গতকাল দেশের সর্বোচ্চ ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। গতকাল ভোর ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বান্দরবানে ১০৯ মিলিমটার রেকর্ড করা হয়েছে। আর ঢাকায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, সব বিভাগেই ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে ঢাকাসহ ১৮ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়। ২ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপিতে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট জেলার ওপর ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেইসঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ সময় দেশের সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।
৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে এপ্রিলে
গত এপ্রিল মাসে দেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল মাত্র এক মিলিমিটার। ১৯৮১ সালের পর দেশে এটাই সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে জনজীবন। একটি এক মিটার দীর্ঘ ও এক মিটার প্রস্থের পাত্রে জমা হওয়া বৃষ্টির পানির উচ্চতা মেপে বৃষ্টিপাত পরিমাপ করা হয়। এক মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের অর্থ হলো এক বর্গফুট জায়গায় মাত্র এক লিটার পরিমাণ বৃষ্টির পানি পড়া। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে গড়ে ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ১৯৮১ সালের পর এটাই ছিল দেশের শুষ্কতম মাস। তিনি জানান, গত মাসে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এক মিলিমিটার বৃষ্টিও হয়নি। অন্যদিকে সিলেটে সর্বোচ্চ ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ঢাকা বিভাগে এপ্রিলে গড় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের তুলনায় ৯১ শতাংশ কম, চট্টগ্রামে ৮৪ শতাংশ কম, ময়মনসিংহে ৮৮ শতাংশ এবং বরিশালে ৮৬ শতাংশ কম হয়েছে। আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এই বছরের এপ্রিলে সার্বিকভাবে গড়ের তুলনায় ৮১ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।

সর্বশেষ - ঢাকা