বর্ষায় উত্তর ভারতের একটা বড় অংশ সংকটের মুখে। গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। উত্তরাখণ্ড থেকে উত্তর প্রদেশ, দিল্লি একাধিক রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে। বৃষ্টির কারণে মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।
এই পরিস্থিতিতে দেশটির পাহাড়ের পর্যটন প্রধান রাজ্যগুলোতে মুখ থুবড়ে পড়েছে ব্যবসা। বন্যার ভয়ে কেউ আর ঘুরতে যাচ্ছেন না। খালি পড়ে আছে হোটেলগুলো।
পর্যটকের অভাবে ধুঁকতে থাকা হোটেলগুলো সচল করতে নতুন উদ্যোগ দেখা গেছে হিমাচল প্রদেশে।
এই রাজ্যের হোটেল সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, পর্যটকরা হোটেল ভাড়া করলে মোট মূল্যের ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় পাবেন। পর্যটক টানতেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে, হিমাচলে বর্ষা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের পক্ষ থেকে পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
হিমাচলের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, তার রাজ্য এই মুহূর্তে পর্যটনের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।
করোনা মহামারির ধাক্কা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠেছে হিমাচল প্রদেশ। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এই রাজ্যে এক কোটির বেশি পর্যটক গিয়েছিলেন। কিন্তু বর্ষায় সেই ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছে। জুলাই মাসে প্রবল বৃষ্টি, পাহাড়ে ধসের কারণে হিমাচলের রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত।
বন্যার ভয়ে পর্যটকরা আর ঘুরতে যাননি। অনেক হোটেল ভাড়া করার পরও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
পাহাড়ি এলাকায় বর্ষাকাল এমনিতেই পর্যটন শিল্পের জন্য আদর্শ সময় নয়। প্রতি বছরই এই সময়টুকুতে পর্যটকের সংখ্যা তাৎপর্যপূর্ণভাবে কম থাকে। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমে যায় পর্যটকের সংখ্যা। কিন্তু হিমাচলে এ বছর হোটেলে পর্যটকের সংখ্যা একেবারে শূন্যতে গিয়ে ঠেকেছে। পর পর সব হোটেলই খালি পড়ে রয়েছে। ফলে সরকারি কিংবা বেসরকারি, সব হোটেলই পর্যটক টানার জন্য বিপুল ছাড় ঘোষণা করেছে। হিমাচল প্রদেশ পর্যটন উন্নয়ন দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, তাদের অধীন হোটেলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
হিমাচল হোটেলের ফেডারেশন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, পর্যটকদের জন্য হিমাচল এখন নিরাপদ। বর্ষায় যে রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, সেগুলোও মেরামত করা হচ্ছে। ফলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। নির্বিঘ্নেই ঘোরা যাবে। হোটেল ব্যবসায়ীদের আশা, সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে পর্যটকের সংখ্যা আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।
বর্ষার বাড়বাড়ন্তের সময় চলতি মৌসুমেই হিমাচলে আটকে পড়েছিলেন অনেক পর্যটক। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অন্তত ৭৫ হাজার পর্যটককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ধস, রাস্তায় যানজট, বন্যায় ভেসে যাওয়া গাড়ি কিংবা পর্যটকদের হেনস্থার একাধিক ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্য থেকে। তবে পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়া গেছে বলেই দাবি হিমাচলের হোটেল সংগঠনের।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা