২১ নভেম্বর ২০২৪, এখন সময় বিকাল ৪:১০ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

ঐক্যবদ্ধভাবে বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখে দিন, আমাদের সমস্যা আমরা সমাধান করবো : লিবারেল ইসলামিক জোট

প্রতিবেদক
সিনিয়র রিপোর্টার
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ ৪:৩০ অপরাহ্ণ

দেশের সমমনা ৬টি রাজনৈতিক দল নিয়ে লিবারেল ইসলামিক জোট নামে নতুন একটি জোট আত্মপ্রকাশ করেছে। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সোমবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জোটটি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে।

ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীকে চেয়ারম্যান, মিছবাহুর রহমান চৌধুরীকে নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র এবং বাকী দলীয় প্রধানদেরকে কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। কো-চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক চৌধুরীকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। জোটের অন্য সঙ্গীরা হলেন- আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহসূফী সৈয়দ আলম নূরী আল সুরেশ্বরী, বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান মো. হাসরত খান ভাসানী।

জোট নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে বিদেশি হস্তক্ষেপ রুখে দিতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করবো। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। মুক্তিযুদ্ধের পর যে পরাজিত শক্তি ও সরকারের ভেতরের বিশ্বাসঘাতকরা জাতির পিতাকে হত্যার পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল, এই পরাজিত শত্রু ও বিশ্বাসঘাতকদের উত্তরসূরীরা আবারও একজোট হয়েছে। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি’র (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী’র সভাপতিত্বে ৬ দলীয় জোটের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। এছাড়া আশিক্কীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাহসুফি সৈয়দ আলম নূরী আল সুরেশ্বরী, বাংলাদেশ জনদল (বিজেডি), চেয়ারম্যান মোঃ মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক চৌধুরী। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী) লিবারেল ইসলামিক জোট প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশে অনেক উন্নয়ন হওয়া সত্ত্বেও সরকারের ভেতরে ঘাপটি মারা একদল দুর্নীতিবাজ, অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও আমলারা দেশের বিপুল অংকের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো যখন হিমশিম খাচ্ছে, সে তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও অনেক স্থিতিশীল। কিন্তু মাফিয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করে দেশবাসীকে অতিষ্ট করে তুলছে। এই অসৎ ব্যবসায়ী ও দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, এদের বিরুদ্ধে কঠোর না হলে এরা দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে শেষ করে ফেলবে। সাম্প্রতিককালে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুস-এর শ্রম আদালতে মামলাকে কেন্দ্র করে বিশ্বের ১৩০ জন নামি-দামী লোকের বিবৃতি, বিশেষ করে হিলারি ক্লিনটনের বিবৃতি প্রত্যাখান করে নেতৃবৃন্ধ বলেন, এ বিবৃতি বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ, মজলুম জনগোষ্ঠীর ন্যায়বিচার পাওয়া ও আভ্যন্তরীণ বিষয়ের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল। তারা বলেন, আমরা মজলুমের পক্ষে, শ্রমিক মহিলারা ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। তাদেরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই হস্তক্ষেপ নারীর ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।

লিবারেল ইসলামিক জোটের নেতারা বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলোর তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট উগ্র সন্ত্রাসী জঙ্গীগোষ্ঠি ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে কিছুই তুলে ধরতে পারেনি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে তারা বলেন, লিবারেল ইসলামিক জোট দেশে অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, তবে কেয়ারটেকার পদ্ধতি চান না। সকল রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানিয়ে তারা বলেন, আমাদের জোট দেশের সবক’টি আসন থেকে প্রার্থী দিবে। আমরা চাই বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে আসুক। মানুষ শান্তি চায়, আর রক্তপাত চায় না। সরকারকে অবশ্যই সবাইকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। লিখিত বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ আরো জানান, তাদের জোট শুধুমাত্র একটি নির্বাচনী জোট নয়, বরঞ্চ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমমনা উদারপন্থীদের জোট। দীর্ঘদিন ব্যাপি অনেক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে ছয়টি দল আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি আরো কয়েকটি নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল আমাদের জোটে অচিরেই যোগ দিবে। তারা বলেন, এই জোট বাংলাদেশ নতুন রাজনীতি, নতুন চিন্তাধারা প্রবর্তন করবে। সত্য ও শান্তির পথে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করবে। কারো লেজুড়বৃত্তি নয়, ন্যায়ের পক্ষে মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন জোট নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে ৯ দফা দাবি পেশ করা হয় : ১. নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিশেষ করে চাল, ডাল, আটা, তেল, পেঁয়াজ ও লবণ এসব খাতে ভর্তুকি প্রদান করে স্বল্পমূল্যে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষকে ক্রয়ের সুবিধা প্রদান করতে হবে।
২. সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হোতাদের গ্রেফতার করতে হবে এবং বিনা কারণে মূল্য বৃদ্ধিকারী মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করত জবাবদিহিতামুলক বাজার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে সকল রাজনৈতিক দলকে যথাযথ সুযোগ দিতে হবে। জনগণের স্বতস্ফুর্ত ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ডেঙ্গু মশা নিধন/নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণ করতে সিটি কর্পোরেশনগুলো ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। অনতিবিলম্বে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণের নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করে দ্রুত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। একইভাবে দেশের সবক’টি মহানগর, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৫. নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবহারকারীদের গ্রেফতার করে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সিলগালা করে দিতে হবে।
৬. দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ-প্রচারকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে পরিবর্তিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের আরো সংশোধনী এনে এর অপ-ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।
৮. সব কটি নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকা, তাদের নেতাদের ছবিসহ নাম-ঠিকানা এবং কর্মকাণ্ড সম্বন্ধে দেশবাসীকে অবগত করতে হবে।
৯. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে গণ শুনানীর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিবারেল ইসলামিক জোটের শরিক সবক’টি দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ - আইন-আদালত