চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক সাধক হযরত গাউছুল আযম মাওলানা সৈয়দ গোলামুর রহমান প্রকাশ বাবা ভাণ্ডারীর (ক:)’র ১৬১তম খোশরোজ শরীফ আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি ও আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়াসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ৩ দিন ব্যাপী কর্মসূচীর ১৪ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার প্রধান দিবসে আখেরী মোনাজাতে লাখো ভক্ত-জনতা অংশগ্রহণ করে। আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন মাইজভান্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান হযরত শাহসূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী মাইজভাণ্ডারী।
খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে আয়োজিত ইসলামী সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে শাহসূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী আল মাইজভাণ্ডারী বলেছেন, ইসলামের সূফিবাদি দর্শন চর্চার উৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে মাইজভাণ্ডার শরিফ। সূফিসাধকরা কখনো মানুষে-মানুষে কোনো প্রভেদ-বিভাজনকে প্রশ্রয় দেন না। তেমনি গাউছুল আ’যম হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভাণ্ডারী (ক.) মানুষে-মানুষে ঐক্য-সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ার দিক নির্দেশনাই দিয়ে গেছেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাতিঘর। ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী আজকের সহিংস অশান্ত বিশ্বে শান্তি ও জননিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে গাউছুল আযম বাবাভাণ্ডারী (ক.) ও মাইজভাণ্ডারী মহাত্মাদের প্রদর্শিত বিশ্বশান্তির রূপরেখা অনুসরণের আহ্বান জানান।
লিবারেল ইসলামিক জোট চেয়ারম্যান আরো বলেন ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতা বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। অবৈধ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলা থেকে নারী শিশু বৃদ্ধ কেউ রেহাই পাচ্ছে না। ৭৫ বছর ধরে ইসরাইল ফিলিস্তিনের ভুমি দখল করে মজলুম মানুষের ওপর ব্যাপকভাবে জুলুম-নির্যাতন হত্যা ধর্ষণ চালিয়ে আসছে। ইসরাইলী বর্বরতা আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হারমানিয়েছে। অথচ সম্রাজ্য বাদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্ররা ইসরাইলকে যুক্তিহীন পক্ষপাতিত্ব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ছাড়া ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধান সম্ভবনয়। যুক্তরাস্ট্র অন্য দেশে গণতন্ত্রে ও মানবাধিকারে ছবক দিলেও ফিলিস্তিনের গণহত্যর ব্যপারে ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাস্ট্রকে এই দি¦চারিতা থেকে বের হতে হবে। লিবারেল ইসলামিক জোট চেয়ারম্যান ফিলিস্তিনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের শান্তিকামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
ইসলামী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন, মইনীয়া যুব ফোরামের সভাপতি শাহ্জাদা আল্হাজ্ব সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, নির্বাহী সভাপতি শাহ্জাদা আল্হাজ্ব সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, শাহ্জাদা আলহাজ্ব সৈয়দ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী, হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব এডভোকেট কাজী মহসীন চৌধুরী।
হযরত বাবাভাণ্ডারীর (ক.) জীবন, কর্ম ওদর্শনের ওপর আলোচনায় অংশ নেন আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সাধারণ সম্পাদক খলিফা শাহ মো: আলমগীর খাঁন, বিএসপি অতিরিক্ত মহাসচিব ও ঘিলাতলা দরবারশরীফের সাজ্জাদানশীন হযরত মাওলানা বাকী বিল্লাহ আল আজহারী, হযরত মাওলানা রুহুল আমীন ভূঁইয়া চাঁদপুরী, অধ্যক্ষ আল্লামা গোলাম মুহাম্মদ খান সিরাজী, আমতল সিদ্দিকীয়া মইনীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা বাকের আনসারী, মুফতী মাওলানা মাকসুদুর রহমান, খলিফা মাওলানা হাসান, হাফেজ খাজা বাহাউদ্দীন, শায়ের মাওলানা মনছুর আলী, হাফেজ মাওলানা কেরামত আলী প্রমুখ। সালাত সালাম শেষে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের মুক্তি এবং দেশ ও বিশ্ববাসীর ওপর আল্লাহর রহমত কামনায় আখেরি মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী মাইজভাণ্ডারী (মা.জি.আ.)।