বিদেশি ফল রামবুটান। সম্ভাবনাময় এ রামবুটান চাষ ছড়িয়ে পড়ছে পাহাড়ে। ফলনও হচ্ছে বাম্পার। চাহিদা বেশি, তাই লাভও বেশি। রামবুটান চাষে আগ্রহ বেড়েছে পাহাড়ের অনেক কৃষকের মধ্যে। এরই মধ্যে পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ি হাট বাজারে সয়লাব হয়েছে রামবুটানের। আম, জাম, কাঁঠাল, আনারসের সাথে পাল্লা দিয়ে এবার বাজার দখল করেছে রামবুটান।
পাহাড়ি সড়কে সড়কে রামবুটানের পসরা সাজিয়ে বসেন কৃষাণীরা। প্রতি কেজি রামবুটান বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত। বিদেশি জাতের এ রামবুটান দেখতে অদ্ভুত সুন্দর। দেখতে অনেকটা কদম ফুলের মতো। কাঁচা অবস্থায় সবুজ। পাকলে উজ্জ্বল লাল, কমলা কিংবা হলুদ। অনেকটা লিচুর মতো। তবে লিচুর চেয়ে আকারে বড়। ডিম্বাকৃতির, কিছুটা চ্যাপ্টাও। দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, স্বাদেও তেমন মজাদার। রসালো এ ফলের গন্ধও অতুলনীয়। তাই এর নাম রামবুটান।
রাঙামাটির রাঙাপানি এলাকার বাসিন্দা সময়ন চাকমার বাগানে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে রামবুটানের। এ ছাড়া রামবুটানে সফলতা পেয়েছে আরেক কৃষি উদ্যোক্তা সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি বলেন, সাধারণত মার্চ মাসে রামবুটান গাছে ফুল ফোটা শুরু হয়। এপ্রিল মাসে সবুজ রঙের ফল ধরতে শুরু করে। ফুল ফোটার ৩-৪ মাস পর জুলাই-আগস্ট মাসে ফল পাকে। পুষ্ট হলে সবুজ রঙের ফল হঠাৎ করে লাল, মেরুন রঙে রূপান্তর হতে থাকে। এ অবস্থা শুরু হওয়ার ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হয়।
অন্যদিকে, পাহাড়ের অনেক কৃষক রামবুটান গাছের চারা বিক্রি করে আয় করেছেন লাখ টাকা। তাই রামবুটান চারা পাহাড়ে এখন সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুধু পার্বত্য জেলা রাঙামাটি নয়, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের চাষিরা সংগ্রহ করেছে রামবুটান চারা বলছেন কৃষি বিভাগ। পাহাড়ি মাটিতে রামবুটান চাষের ফলন বেশি হওয়ায় চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে অন্য চাষিদের মাঝেও।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রামবুটান চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে এ রামবুটানের। কারণ সব ধরনের মাটিতে এ ফল চাষ করা যায়। তাই কৃষি কর্মকর্তার রামবুটান চাষ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছে। কৃষি বিভাগ চেষ্টা করছে দেশিও জাতের রামবুটানের পাশপাশি কিছু বিদেশি জাতের রামবুটানের চারা গাছ যুক্ত করতে। যাতে ফলন ভালো পাওয়া যায়।