দেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র সহিংসতার কারণে পোশাক রপ্তানিকারকদের সঙ্গে অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদেরও সাতদিনের বন্দর ডেমারেজ চার্জ মওকুফ (পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে চার্জ) করেছে সরকার। ৩১ জুলাই এই সুবিধা দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বন্দর) বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, প্রথমে বিজিএমইএ’র ব্যবসায়ীদের সাতদিনের পোর্ট ডেমারেজ মওকুফ করা হয়েছিল। পরে এফবিসিসিআই ও এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে অন্যদের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ব্যবসায়ীদের জন্য সাত দিনের এ চার্জ মওকুফের সিদ্ধান্ত জানিয়ে ৩১ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত ১৬ জুলাই থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব আমদানি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে নামানো হবে, সেসব পণ্যেই কেবল এই ছাড় পাওয়া যাবে। তবে ছাড় পাওয়ার জন্য ১৪ আগস্টের মধ্যে পণ্যের চালান বন্দর থেকে খালাস করে নিতে হবে।
জাহাজ থেকে নামানোর চার দিন পর্যন্ত বিনা চার্জে বন্দরে পণ্য রাখা যায়। এর বেশিদিন বন্দরে পণ্য রাখলে অতিরিক্ত চার্জ দিতে হয়, যাকে বলা হয় পোর্ট ডেমারেজ চার্জ বা স্টোররেন্ট। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী এখন অতিরিক্ত সাত দিনের জন্য ছাড় পাওয়া যাবে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ১১ দিনের জন্য ছাড় পাচ্ছেন আমদানিকারকরা।
গত ২৮ জুলাই সচিবালয়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা জানান, সহিংসতার কারণে বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৩৭ হাজার আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনার খালাসের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে ১৩ হাজার কন্টেইনার তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট। এছাড়াও এরইমধ্যে প্রায় ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার পোর্ট ডেমারেজ চার্জ তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানিকারকদের ওপর ধার্য হয়েছে। বৈঠক শেষে পোশাক রপ্তানিকারকদের সাতদিনের বন্দর ডেমারেজ চার্জ মওকুফ (পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে চার্জ) করার সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য ব্যবসায়ীরা বৈষম্যের অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরই আলোকে তারাও এই ছাড় পেতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন।