timewatch
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, বিকাল ৫:০২ মিনিট
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন
শিরোনাম

টেকসই বিনিয়োগ বান্ধব নীতিকাঠামো ইইউ বিনিয়োগ আকর্ষণে জরুরী : ডিসিসিআই’র সভাপতি

প্রতিবেদক
স্টাফ রিপোর্টার
অক্টোবর ৪, ২০২৩ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ

ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তার বলেছেন, বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম সহযোগী হলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যেখানে ২০২৩ অর্থবছরে আমাদের মোট রপ্তানির প্রায় ৪৮শতাংশের গন্তব্য হলো ইইউভুক্ত দেশসমূহ, যার পরিমাণ ২৫.২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ইইউ-এর বেশকিছু কোম্পানী বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ৩.৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে, যা আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, শিল্পখাতে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ আনায়ন, সাপ্লাইচেইন শক্তিশালীকরণ সহ সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

৪ অক্টোবর ২০২৩ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে পরিচালিত ইউরোপীয়ান কোম্পানীগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

এতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি প্রধান অতিথি ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের পর ইইউ-এর বাজারে পণ্য রপ্তানিতে আমরা বিদ্যমান শুল্ক সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবো, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও স্থানীয় শিল্পায়নকে ব্যাহত করবে, এমন বাস্তবতায় আমাদের পণ্যে রপ্তানির শুল্কমুক্ত সুবিধা ২০২৯ পর্যন্ত অব্যহাত রাখা জরুরী। একই সাথে বাংলাদেশ হতে তৈরি পোষাকের পাশাপাশি পাদুকা, হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, মেশিনারিজ, কেমিক্যাল প্রভৃতি আরো বেশি হরে আমাদানির জন্য ইইউ-এর উদ্যোক্তাদের প্রতি আহŸান জানান ব্যারিস্টার সাত্তার। তিনি আরো বলেন, ইইউ বাংলাদেশের জন্য শুধুমাত্র রপ্তানির গন্তব্যই নয়, একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবসায়িক উন্নয়ন সহযোগী। ডিসিসিআই সভাপতি আশা করেন, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর বিদ্যমান রপ্তানি সুবিধা রাখতে চলমান জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশনের প্রধান রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াটলি বলেন, বহুবছর ধরেই ইইউভুক্ত দেশসমূহ বাংলাদেশের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির একটি আদর্শ গন্তব্যস্থল এবং ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগটি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এলডিসি উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে ইইউ’র সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশ^স্ত করেন, ইইউ রাষ্ট্রদূত। তথ্য-প্রযুক্তি, এভিয়েশন, নবায়নযোগ্য জ¦ালানি, কৃষি, ঔষধ প্রভৃতি খাতে ইইউ কোম্পানীসমূহের বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে, তিনি মত প্রকশ করেন। এছাড়াও বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে আরো বেশি হারে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রম সম্প্রসারণের উপর রাষ্টদূত জোরারোপ করেন।

প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের বিনিয়োগে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এবং রানা প্লাজার ঘটানার পর আমাদের তৈরি পোষাকখাতে নতুন সম্ভাবনার তৈরি করেছে, যেখানে ইইউ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের নানা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেটাকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সকলের সহযোগিতায় মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো এদেশে পরিচালিত ইইউ কোম্পানীগুলোকে আরো বেশি হারে এ্যাডভোকেসি করার আহ্বান জানান বাণিজ্য মন্ত্রী।

বিশেষ অতিথি’র বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সকল ধরনের সেবা নিশ্চিতকরতে বিডা বদ্ধপরিকর এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরে বিডার ‘ওএসএস’ প্ল্যাটফর্ম হতে বিনিয়োগকারীদের জন্য সকল ধরনের সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে। তিনি জানান, আমাদের স্থানীয় বাজারের পরিমাণও বেশ বড়, যেখানে ইইউ কোম্পানীসমূহ বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো স্থানীয় উদ্যোক্তা খুঁজে পেতে বিডা সহযোগিতা করবে বলে তিনি অভহিত করেন।

অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে ইইউ’র বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ: কোম্পানীজ প্রেক্ষিত’ এবং ‘জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশের কর্মপন্থা’ বিষয়ক দুটি বিষয় ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাসের কনুস্যল জোরেট মারভেলিন-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে ইইউ’র বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জ: কোম্পানীজ প্রেক্ষিত’ বিষয়ক সেশনে এয়ারবাসের আবাসিক প্রতিনিধি মুরাদ বুরোফালা, লাফাজ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড-এর সিইও ইকবাল চৌধুরী, পেট্রোম্যাক্স এলপিজি লিমিটেড-এর সিইও মাসিহ নিয়াজি এবং জালো নিটিং লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরিয়া লোপেজ অংশগ্রহণ করেন। এয়ারবাসের আবাসিক প্রতিনিধি বাংলাদেশের মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোরারোপ করেন। ইকবাল চৌধুরী বলেন, ইইউ কোম্পানীগুলোর বিনিয়োগ আকর্ষনে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই নীতি সহায়তা এবং জ¦ালানী নিরাপত্তা একান্ত জরুরী। মাসিহ নিয়াজি বাংলাদেশের অবকাঠামো, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রস্তাব করেন। নুরিয়া লোপেজ বলেন, বাংলাদেশের বিনিযোগ সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সাথে বর্হিবিশে^ বাংলাদেশের ইমেজ বাড়ানোর উপর জোরারোপ জরুরী। তিনি আরো জানান, শ্রীঘ্রই ইইউ- বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স-এর কার্যক্রম শুরু করা হবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মোঃ সামীর সাত্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘জিএসপি প্লাস সুবিধা পেতে বাংলাদেশের কর্মপন্থা’ বিষয়ক সেশনে এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফেকচার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, বিজেএমইএ’র সহ-সভাপতি মিরান আলী, বাংলাদেশ বাইসাইকেল অ্যান্ড পার্টস ম্যানুফেকচার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মোশতাক আহমেদ তানভীর, বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এবং এইচঅ্যান্ডএম-এর রিজিওন্যাল কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান অংশগ্রহণ করেন। বৈশি^ক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের উপর জোরারোপ করেন জিয়াউর রহমান।

মোহাম্মদ মোশতাক আহমেদ তানভীর বলেন, ইউরোপের বাজারে ই-বাইকের ব্যবহারের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যেটা আমাদের বাইসাইকেল শিল্পের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। মিরান আলী বলেন, তৈরি পোষাক খাতে সারা পৃথিবীতে আমাদের সবচেয়ে বেশি লিডসার্টিফাইড কোম্পানী রয়েছে, যেটি ইইউ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে সহায়তা করবে। রাসেল টি আহমেদ বলেন, বর্তমানে ৮৪টি বাংলাদেশী কোম্পানী তথ্য-প্রযুক্তি সেবা জাপানের বাজারে রপ্তানি করছে এবং বাংলাদেশের আইসিটি খাতের ইমেজ বাড়ানোর উপর জোরারোপ করতে হবে, সেই সাথে এখাতে জয়েন্ট ভেঞ্চার বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, বাংলাদেশ হতে চামড়া শিল্পের বৈশি^ক কোম্পানীসমূহ পণ্য আমদানি করছে। ইউরোপীয়ন কোম্পানীকে বাংলাদেশের সাপ্লাইচেইন খাতে আরো বেশি হারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য তিনি আহ্বান জানান। বাংলাদেশের গ্রীণ ফ্যাক্টরিমূহের উপাদিত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির উপর তিনি জোরারোপ করেন। সেই সাথে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে বাংলাদেশে ভোকেশন্যাল ট্রেনিং কার্যক্রম বাড়ানোর আহ্বান জানান সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিল্পখাতের প্রস্তুতি, দীর্ঘময়োদী টেকসই বিনিয়োগবান্ধব নীতি সহায়তা, সহায়ক কর কাঠামো, বহির্বিশ্ব ইতিবাচক ভাবমূর্তির উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে দক্ষ মানবম্পদ, রপ্তানির সক্ষমতা ও পণ্যের বহুমুখীকরণ প্রভৃতি বিষয়সমূহ ইইউ বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা পালন করবে বলে মত প্রকাশ করেন বক্তারা।

ঢাকা চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মোঃ জুনায়েদ ইবনে আলী সহ চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ - ধর্মতত্ত্ব

আপনার জন্য নির্বাচিত