১২ ডিসেম্বর ২০২৪, এখন সময় সকাল ৮:২২ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

আজ পবিত্র আশুরা

প্রতিবেদক
ডেস্ক রিপোর্টার
জুলাই ১৭, ২০২৪ ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

আজ মহরমের দশম তারিখ, পবিত্র আশুরা। কারবালার ‘শোকাবহ এবং হৃদয়বিদারক ঘটনাবহুল’ এ দিনটি বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আজকের দিনটি অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। আরবি ‘আশারা’ থেকে আশুরা শব্দটি এসেছে। অর্থ- দশ। মহররমের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়।

হাদিস শরিফে এই মাসকে ‘আল্লাহর মাস’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। মাসটি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাসের সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ ও সম্মানিত মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এসব মাসে তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করো না।’ (সুরা তাওবা: ৩৬)। মাস চারটি হলো-জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব।

ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগেও মহররম ও আশুরাকে মর্যাদা ও সম্মানের চোখে দেখা হতো। এমনকি মহররম মাসের পবিত্রতা ও মর্যাদার কথা বিবেচনা করে যুদ্ধপ্রিয় আরবরা মহররম মাসে সব ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ থেকে বিরত থাকত। তাই এ মাসের নামকরণ করা হয়েছে ‘মহররম’ বা ‘মর্যাদাপূর্ণ’ বলে। কাজেই সৃষ্টির সূচনা থেকেই মহররম মাসটি বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে আসছে।

৬১ হিজরি সালের এই দিনে হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রাণপ্রিয় দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার পরিবারের সদস্যরা ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে কারবালার ময়দানে শহিদ হন। পবিত্র আশুরা তাই মুসলিম উম্মাহর জন্য এক তাৎপর্যময় ও শোকাবহ দিন। দিনটি মুসলমানদের কাছে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠারও দিন। দিনটি আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে খুবই প্রিয়। তাই তিনি এই দিনে রোজা পালনের সওয়াব প্রদান করে থাকেন বহুগুণে। মুসলমানদের কাছে বিগত বছরের গোনাহর কাফফারা হিসেবে মহরমের দুটি রোজা রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

হজরত আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: মাহে রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো আল্লাহর প্রিয় মহরম মাসের রোজা। এবং ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতের (তাহাজ্জুদ) নামাজ (সহিহ মুসলিম)। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন, তিনি আশুরার দিনে ইহুদিদের রোজা পালন করতে দেখলেন। ‘ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় এসে দেখলেন যে, ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা পালন করছে। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এটা কোন দিন যে তোমরা রোজা পালন করছ? তারা বলল, এটা এমন এক মহান দিবস, যেদিন আল্লাহ হজরত মুছা (আ.) ও তার সম্প্রদায়কে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফেরআউনকে তার দলবলসহ ডুবিয়ে মেরেছিলেন। মুছা (আ.) শুকরিয়া হিসেবে এই দিনে রোজা পালন করেছেন। এ কারণে আমরাও রোজা পালন করে থাকি। এ কথা শুনে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন :তোমাদের চেয়ে আমরা মুছা (আঃ)-এর অধিকতর ঘনিষ্ঠ ও নিকটবর্তী। অতঃপর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা পালন করলেন এবং অন্যদের রোজা পালনের নির্দেশ দিলেন। (বুখারি ও মুসলিম)। আশুর নিয়ে বহু কথা, অনেক ইতিহাস প্রচলিত থাকলেও সহিহ বুখারি ও মুসলিমের হাদিস অনুযায়ী পবিত্র আশুরার দিনে মুসা (আ.) ও তার সাথিদের মুক্তি পাওয়া ছাড়া আর কোনো ঘটনা প্রমাণিত নয়। এই দিনে মহান আল্লাহ তার রসুল মুসা (আ.) ও তার সঙ্গী বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের হাত থেকে উদ্ধার করেন এবং ফেরাউন ও তার সঙ্গীদের ডুবিয়ে মারেন। পবিত্র আশুরার দিন মুসলিম জাহানের জন্য এ কারণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে সাম্য, ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মা’র ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পবিত্র আশুরা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, পবিত্র আশুরার দিনে অনেক নবী, রাসুল ও আল্লাহ’র প্রিয় বান্দাগণ তাঁর নৈকট্য ও সাহায্য লাভ করে কঠিন বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। সে হিসেবে, আমি বিশ্বাস করি, এ দিনে বিশেষ নেক আমল মানব জাতির জন্য অনেক কল্যাণ বয়ে আনবে।

এদিন আহলে বাইত তথা নবীর পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করা, দরুদ পড়া এবং তাঁদের কাছ থেকে সত্যের ওপর অটল থাকার শিক্ষা গ্রহণ করা মুসলিম উম্মাহর উচিত।

আশুরার তাৎপর্য নিয়ে জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেল আজ বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, সিসিটিভি, সাইবার চেকিংসহ যেসব নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তা নেওয়া হয়েছে। তাজিয়া মিছিলে যারা অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে ছুরি, চাকু ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে না আসার জন্য ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়েছেন।

সর্বশেষ - আইন-আদালত

আপনার জন্য নির্বাচিত