৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের প্রায় ৫৪ লাখ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নানা আশঙ্কার পাশাপাশি তৈরি হতে পারে নতুন সম্ভাবনাও। তাই সমস্যা মোকাবিলা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারের নতুন কৌশলপত্র তৈরি করা দরকার। ১১ নভেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং জার্মান উন্নয়ন সংস্থার এফইএস বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এ আশঙ্কার কথা জানান।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। এসময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সলিম উল্লাহ, এফইএস বাংলাদেশ-এর আবাসিক প্রতিনিধি ড. ফেলিক্স গার্ডেস। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. কাজী মুহাইমিন-উস-সাকিব।
মূল প্রবন্ধে সংস্থা এটুআই এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও’র গবেষণার তথ্য উল্লেখ করে আরো বলা হয়, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ২৭ লাখ, ফার্নিচার খাতের প্রায় ১৪ লাখ, কৃষিপণ্য ও পর্যটন খাতের ৬ লাখ করে ১২ লাখ এবং চামড়া শিল্পের ১ লাখসহ মোট ৫৪ লাখ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন। মূল প্রবন্ধে এই তথ্যের সমর্থনে গবেষণা সংস্থা সিপিডি ও পিআরআইর তথ্যও তুলে ধরা হয়। সেই সঙ্গে বলা হয়, দক্ষ কর্মী এবং পর্যাপ্ত অবকাঠামো অভাবের কারণে এ কারণে সংকটে পড়তে পারে দেশের এসএমই খাতও। বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পরও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটি ব্যবহারে এখনো পিছিয়ে দেশের এসএমই খাত। এ অবস্থায় ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন কৌশলপত্র তৈরি হলে এসএমই খাতের পণ্য রপ্তানি, নতুন বিজনেস মডেল তৈরি এমনকি নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে এসএমই খাতে। সেমিনারে এসএমই উদ্যোক্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর, এসএমই চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, গবেষক, অর্থনীতিবিদ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।
দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতিসংঘের এসডিজি ২০৩০ এবং সরকারের নির্দেশনা অনুসারে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী দেশের প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা।