৮ অক্টোবর ২০২৫, এখন সময় সন্ধ্যা ৭:১৩ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

মাইজভাণ্ডারী গানে দেশের সংস্কৃতি-সাহিত্যের উপর প্রভাব

প্রতিবেদক
মোঃ ইব্রাহিম মিয়া
অক্টোবর ৭, ২০২৫ ৭:২৪ অপরাহ্ণ

দেশের লোকসংগীত ঐতিহ্যে মাইজভাণ্ডারী গান একটি বিশেষ অবস্থান দখল করে আছে। মূলত চট্টগ্রামের মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই সংগীতধারা সুফি দর্শনের অনুকরণে গঠিত। এই নিবন্ধে মাইজভাণ্ডারী গানের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে, এই গান শুধুমাত্র ধর্মীয় আবহে সীমাবদ্ধ না থেকে বৃহত্তর বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী অনুষঙ্গে রূপ নিয়েছে এবং সাহিত্যিক কাব্যচর্চা, আধ্যাত্মিক ভাবনা ও ভাষার বিকাশে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। মাইজভাণ্ডারী গান মূলত সুফিবাদ, লোকসংগীত, বাংলা সাহিত্য, আধ্যাত্মিকতা, সংস্কৃতি, দরবার শরীফকেন্দ্রিক। বলতে গেলে, দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লোকসংগীত একটি প্রাণবন্ত ধারাবাহিকতা। এর মধ্যে মাইজভাণ্ডারী গান এক বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ধারার উদাহরণ, যা সুফি ভাবাদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। গাউসুল আজম হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (রহ.) ও গাউসুল আজম হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ গোলামুর রহমান প্রকাশ বাবাভাণ্ডারীর (রহ.) আধ্যাত্মিক দিকনির্দেশনা ও তাঁদেরই ভক্ত অনুসারীরা আল্লাহ প্রেমের গভীর নিমঘ্নতায় মানবতাবাদী দর্শনের চর্চা, প্রচার-প্রসার ও আত্মিক প্রশান্তিতে আধ্যাত্মিক সংগীতকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেন। এই গানসমূহ সময়ের পরিক্রমায় শুধুমাত্র ধর্মীয় গানে সীমাবদ্ধ না থেকে সমাজ-সংস্কৃতি ও সাহিত্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
মাইজভাণ্ডারী গানের উদ্দেশ্য
মাইজভাণ্ডারী গানের সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক গুরুত্ব বিশ্লেষণ করা; এ গানের আধ্যাত্মিক ও মানবতাবাদী প্রভাব অনুধাবন করা; বাংলা সাহিত্য ও সমাজে এর অবদান চিহ্নিত করা।
মাইজভাণ্ডারী গানের কর্ম-পদ্ধতি
মাইজভাণ্ডারী গানে গুণগত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের উৎস হিসেবে- প্রাথমিক উৎস : মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ ও সংগীতানুষ্ঠানের পর্যবেক্ষণ, স্থানীয় অনুসারীদের সাক্ষাৎকার; মাধ্যমিক উৎস : প্রকাশিত গবেষণা নিবন্ধ, গান সংকলন, সাহিত্যিক প্রবন্ধ ও ইতিহাসগ্রন্থ।
মাইজভাণ্ডারী গানের উৎস ও বৈশিষ্ট্য
মাইজভাণ্ডারী গান চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় অবস্থিত মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফকেন্দ্রিক একটি সুফি সংগীতধারা। এই গানগুলো মূলত দরবারের আধ্যাত্মিক শিক্ষা, মুর্শিদের প্রতি প্রেম, আত্মশুদ্ধি, পরকালচিন্তা এবং মানবসেবার মতো বিষয় নিয়ে গঠিত। এই গানে ধ্রুপদী রাগ-রাগিণীর প্রভাব থাকলেও ভাষা অত্যন্ত সহজ ও সংবেদনশীল।
সাংস্কৃতিক প্রভাব ও লোকসংগীতের পরিমণ্ডলে বৈচিত্র্য আনা
মাইজভাণ্ডারী গান বাউল, মারফতি, মুর্শিদি গানের ধারার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হলেও একটি স্বতন্ত্র সুফি ঘরানা গঠন করেছে, যা দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
মাইজভাণ্ডারী গানে ধর্ম ও মানবতার সংমিশ্রণ
মাইজভাণ্ডারী গান ধর্মীয় গণ্ডির বাইরে গিয়ে সর্বজনীন মানবতাবাদী চেতনা জাগিয়ে তুলেছে। মাইজভাণ্ডারী গানে হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য আত্মশুদ্ধি ও প্রেমের বার্তা রয়েছে।
মাইজভাণ্ডারী গান আচার-অনুষ্ঠানের অংশীদার
চট্টগ্রাম অঞ্চলের সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই গান অপরিহার্য। ওরস মাহফিল, মিলাদ ও স্থানীয় উৎসবগুলোতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সাহিত্যিক প্রভাব ও আধ্যাত্মিক ভাবনার রূপায়ণ
মাইজভাণ্ডারী গানে সূক্ষ্ম আধ্যাত্মিক উপমা ও প্রতীক ব্যবহৃত হয়, যা বাংলা কাব্য সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
মাইজভাণ্ডারী গানে আঞ্চলিক ভাষা ও উপস্থাপন পদ্ধতি
গানগুলোতে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক উপভাষার ব্যবহার বাংলা সাহিত্যিক ভাষার বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করেছে। এটি স্থানীয় সাহিত্যিকদের লিখনশৈলীতেও প্রভাব ফেলেছে।
মাইজভাণ্ডারী গান ও সুফিবাদী সাহিত্যচর্চা
বাংলা সাহিত্যে সুফিবাদী দর্শনের প্রসারে মাইজভাণ্ডারী গান এক উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। এর প্রভাবে অনেক কবি-সাহিত্যিক আধ্যাত্মিক ভাবনায় অনুপ্রাণিত হন।
মাইজভাণ্ডারী গান ও আধুনিক যুগে এর প্রভাব 
বর্তমান সময়ে মাইজভাণ্ডারী গান শুধুমাত্র দরবারের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর প্রচার ও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। তরুণ প্রজন্ম নতুন সুর ও বিন্যাসে এই গানকে নতুনভাবে উপস্থাপন করছে, ফলে এটি একটি ‘জীবন্ত সাংস্কৃতিক সম্পদ’ এ পরিণত হয়েছে।
শেষ কথা ও কিছু প্রস্তাবনা
মাইজভাণ্ডারী গান বাংলাদেশের লোকসংগীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা, যা কেবল আধ্যাত্মিকতা নয় বরং সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানা শাখায় প্রভাব বিস্তার করেছে। এর মাধ্যমে সমাজে মানবতা, ভালোবাসা ও আত্মশুদ্ধির যে বাণী প্রচারিত হয় তা আগামী প্রজন্মের সাংস্কৃতিক চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এতে প্রতীয়মান হয়েছে যে, মাইজভাণ্ডারী গান বাংলা সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক পরিমণ্ডলে একটি স্থায়ী প্রভাব রেখে চলেছে। তাই মাইজভাণ্ডারী গানের সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য জাতীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। একাডেমিক পর্যায়ে লোকসংগীত গবেষণায় মাইজভাণ্ডারী গানকে অন্তর্ভুক্তকরণ। পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই গানের গুরুত্ব তুলে ধরতে কর্মশালা ও সেমিনার আয়োজন সময়ের দাবি।
লেখক : কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক ও গবেষক

সর্বশেষ - আইন-আদালত

আপনার জন্য নির্বাচিত

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল এসএসসি পরীক্ষার্থীর

অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য তালিকা দিল বিএনপি

বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি পরিবর্তনে সহায়তা দেবে ইফাদ

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট উদ্বোধন

রাসূলে পাক (দ.) আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীবাসীকে শান্তি, সাম্য ও মুক্তির পথ দেখান : ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী

চিটাগাং চেম্বারে জাতীয় লজিস্টিক উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভা

মাইজভাণ্ডার শরীফ জিয়ারত করেন মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি

২৯ কেজি ওজনের বাগাইড় ৩৪ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি

বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেওয়ার দাবি ডিআরইউয়ের

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বৈশ্বিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন