বাংলাদেশে সনাতম ধর্মের মানুষদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষে দেশের ১২টি জেলায় সম্প্রদায়টির সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে ‘সনাতন বন্ধুরা সনাতন মানুষের পাশে’ নামে একটি ভার্চুয়াল সংগঠন। প্রায় সাত মাস আগে জন্ম নেওয়া সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের অর্থায়নে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মানুষগুলোর হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দিয়েছে।
ভার্চুয়াল সংগঠনটির গ্রুপ অ্যাডমিন রাজীব মজুমদার জানান, গত ১২ আগস্ট থেকে সংগঠনের সবার সিদ্ধান্তে ফান্ড সংগ্রহ শুরু হয়। পরে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, ফেনী, রংপুর, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার. চাঁদপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ জেলার সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের হাতে নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, কারো একার পক্ষে হয়ত ১০ জনকে সহযোগিতা করা সম্ভব। কিন্তু সম্মিলিতভাবে এর পরিধি হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আমাদের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। সমাজের মানুষ এগিয়ে এলো কোনো উৎসবই দেশের মানুষের নিরানন্দ কাটবেনা।
সংগঠনটির সদস্য শুভাশীষ চৌধুরী জানান, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার এক কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর নেত্রকোনার এক অসহায় বন্ধুকে কম্পিউটার দিয়ে ওর জীবিকার সংস্থান করা হয়। এরই ধারাবাহকিতায় দুর্গাৎসবে নতুন বস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করি।
সংগঠনের সদস্য সঞ্জয় সাহা জানান, বন্ধুদের মাধ্যমে বিভিন্ন রিমোট এলাকার খোঁজ-খবর নিয়ে তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এটি বাস্তবায়ন করতে আমরা ঘুরেফিরে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছি। রাত-দিন ঘুরে বিভিন্ন চা বাগান, সুন্দরবনের পাশে অবহেলিহত গ্রামে, বিভিন্ন নদীর চর থেকে আসা মানুষের কথা শুনেছি এবং তাদের মধ্যে আমাদের সামান্য ভালবাসা তুলে দিয়েছি।
পলাশ পাল জানান, নিজের অর্থায়নে যতটুকু সম্ভব মানুষের কাছে ভালোবাসা পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও বেশি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবো।
জীবন দাশ, শান্ত সাহা আর অনেকেই বলেন, সমাজের মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সংগঠনটির ব্রত। ভবিষ্যতেও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
শেষে গ্রুপ অ্যাডমিন রাজীব মজুমদার, দেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা সংগঠনটির সদস্য কল্যাণ, শীবেন, শুশাংঙ্কর, অপু, কেয়া, উজ্জল, অসিত, শেলী, সজীব, শীলা, অমিত, প্রশান্ত, মৃত্যঞ্জয়, কান্তা, বিউটি, লিটন, বিপ্লব, শ্রাবণী, সুবর্ণা, আমেরিকা প্রবাসী চম্পা, সমীর, জুয়েল, সুমন, তাপস, সুদীপ, তুহিন, সজল, রনি, অজয়, হৃদয়, মিলন, ইলা, অপর্ণা, রঞ্জন, শিমুলসহ সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।