৩ জুন ২০২৫, এখন সময় দুপুর ২:২৩ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

‘শিল্প রক্ষায় ব্যর্থ হলে দেশে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি অনিবার্য হয়ে উঠবে’

প্রতিবেদক
A K Nahid
মে ২৬, ২০২৫ ২:৫১ অপরাহ্ণ

বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে দেশের শিল্প খাত ধ্বংসের মুখে বলে অভিযোগ করেছেন দেশের শীর্ষ শিল্পোদ্যোক্তারা। তারা বলেছেন, শুধু শিল্প নয়, উদ্যোক্তাদেরও মেরে ফেলা হচ্ছে। সরকার যদি এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তবে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি অনিবার্য হয়ে উঠবে। ২৫ মে রাজধানীর গুলশান ক্লাবে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব উদ্বেগ জানান শিল্পপতিরা। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ,বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমইএ), বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) ও আইসিসি-বাংলাদেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ১৯৭১ সালে যেমন করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল, ২০২৫ সালে ঠিক তেমনই করে উদ্যোক্তাদের ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা গ্যাসের জন্য বিল দিচ্ছি অথচ গ্যাস পাচ্ছি না। কারখানা চলে না কিন্তু ব্যাংক ঋণ ফেরতের চাপ, উচ্চ সুদের হার ও সরকারের হুমকি– সব মিলিয়ে আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তিনি বলেন, শিল্প রক্ষা করতে না পারলে দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। মানুষ রাস্তায় নামবে।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, তিন মাস ঋণের কিস্তি দিতে না পারলেই উদ্যোক্তাকে খেলাপি ঘোষণা করা হচ্ছে। অথচ গ্যাস নেই, উৎপাদন নেই, সময়মতো বেতন দেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সরকার একদিকে সহায়তা করছে না, অন্যদিকে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে।
বিটিটিএলএমইএ’র চেয়ারম্যান হোসেন মেহমুদ জানান, গ্যাসের অভাবে ইতোমধ্যেই পাঁচ-ছয়টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে পারছে না– এটা কি দোষ নয়? ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনতে পাইপলাইন স্থাপন, সমুদ্রে গ্যাস কূপ খনন ও কয়লা উত্তোলনে নীতি গ্রহণ না করলে আরও ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে।
বিটিএমএ’র পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘সরকার যদি টেক্সটাইল খাত রক্ষা করতে না চায়, তাহলে এটা পরিষ্কার করে বলা উচিত। গ্যাস না দিলেও বিল করা হচ্ছে– এ কেমন নীতি?’
সহ-সভাপতি সালেহ-উদ-জামান খান বলেন, ‘আমার কারখানায় প্রতিদিন ৬০ লাখ টাকা বেতন দিতে হচ্ছে, অথচ উৎপাদন বন্ধ। গ্যাস কম্পানিগুলো পালস মিসিংয়ের নামে অতিরিক্ত বিল নিচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে দেশের অর্ধেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের সুদের হার ১৪-১৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা অনেক উদ্যোক্তার জন্য মৃত্যুঘণ্টা। বিনিয়োগ না আসার পেছনে বড় কারণ হলো- দেশে ব্যবসায়িক পরিবেশের অবনতি। বিডা ও সরকার টু সরকার আলোচনা করলেও বাস্তবে বিনিয়োগ আসছে না।
শিল্পপতিরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় কাগজ শিল্পকে ধ্বংস করে সরকার শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানি করেছে। চিনিশিল্প থাকার পরও চিনি আমদানি করা হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্তকে তারা স্থানীয় শিল্পবিরোধী ও আত্মঘাতী বলছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের কাছে অবিলম্বে জ্বালানি সংকট নিরসন, সুদহার কমানো, শিল্প-বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন এবং উদ্যোক্তাদের সুরক্ষার জন্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। আজকের নীরবতা কাল ভয়াবহ সংকট ডেকে আনবে। সময় থাকতে ব্যবস্থা না নিলে দেশের শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে এবং তার দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে জানান তারা।

 

সর্বশেষ - আইন-আদালত