১০ মার্চ ২০২৫, এখন সময় দুপুর ১:০৫ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

নানা সংকটে ব্যাংকিং খাত, কখন দেখবে আলোর মুখ

প্রতিবেদক
স্টাফ রিপোর্টার
জানুয়ারি ৩০, ২০২৫ ৩:২২ অপরাহ্ণ

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ২০২৪ সালের ব্যাকিং খাত বেশ ঘটনাবহুল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র পুরোপুরি পাল্টে গেছে। আওয়ামী লীগের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে দেশের আর্থিক খাতে সুশাসন ছিল অনুপস্থিত। ভেঙে পড়ে ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা, ঋণের নামে লুটপাট করা হয় হাজার হাজার কোটি টাকা। সরকার পতনের পর প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে ব্যাংকিং খাতের নানা অনিয়মের চিত্র।
এক বছর ধরে দেশে ডলার সংকট ও তারল্য সংকট বেড়েছে। ব্যাংকগুলো খারাপ অবস্থায় পড়েছে, নতুন ঋণ অনুমোদনেও বাধা ছিল, খেলাপি ঋণ বেড়েছে অনেক। বিপরীতে তাগাদা দেওয়ার পরেও তা আদায় হচ্ছে না। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট বেড়েছে। রিজার্ভ কমে গেছে। এলসি খোলা ও নিষ্পত্তিতে উভয় সংকটে পড়তে হয়েছে ব্যাংক ও গ্রাহকদের।
তারল্য ঘাটতি
দেশের নয়টি ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদামতো টাকা দিতে পারছে না। কোনো কোনো ব্যাংক গ্রাহকদের সারাদিন বসিয়ে রেখে টাকা না দিয়ে পরের দিন যেতে বলছে। এসব ব্যাংকের চলতি হিসাবের ঘাটতি ১৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এস আলমের দখলে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের। এ ব্যাংকটির ঘাটতির পরিমাণ ৭ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, ‘টাকা ছাপিয়ে ওই সব ব্যাংককে দেওয়া হবে না। যেসব ব্যাংকে উদ্বৃত্ত তারল্য আছে তাদের দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিতে বলা হয়েছে। আর এর গ্যারান্টার হবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
তবে তাতে তেমন সাড়া না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে টাকা ছাপিয়ে টাকা ধার দিতে হয়েছে।
টাকা ছাপিয়ে ঋণ
আগের সরকারের মতো টাকা ছাপিয়ে সরকারকে বা কোনো ব্যাংককে অর্থ দেওয়া হবে না- গত আগস্টেই এমন মন্তব্য করেছিলেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তবে এমন মন্তব্যের তিন মাসের মধ্যেই সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। টাকা ছাপিয়ে ছয়টি দুর্বল ব্যাংককে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা জানান গভর্নর নিজেই। গভর্নর জানান, এসব ব্যাংকের গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারবেন। যদিও সমস্যা এখনও কিছুটা রয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, একদিকে যেমন টাকা ছাপানো হচ্ছে, তেমনি সেই টাকা বাজার থেকে তুলেও নেওয়া হবে বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে। এর ফলে মূল্যস্ফীতিকে ঠিক রাখার প্রচেষ্টা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন না বলেও জানান গভর্নর।
গভর্নরকে বয়কট : আর্থিক খাতের বিরল ঘটনা
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও অবাধ তথ্য প্রবাহ প্রকাশে বাধার প্রতিবাদে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের বক্তব্য বয়কট করেছিলেন সাংবাদিকরা। যা দেশের আর্থিক খাতের জন্য বিরল ঘটনা। রীতি অনুযায়ী বাজেট ঘোষণার পরের দিন সংবাদ সম্মেলন করেন অর্থমন্ত্রী। সাধারণত বাজেটোত্তর এ সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের। ব্যাংকখাত সংশ্লিষ্ট, মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে থাকেন তিনি। তবে এবার হয়েছে তার ব্যতিক্রম। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে বয়কটের ঘোষণা দেন।
আলোচনায় এনআরবিসির গুরুতর অনিয়ম
অনিয়ম জালিয়াতির মাধ্যমে একের পর এক অপরাধ করে তা লুকিয়ে রেখেছিলেন এনআরবিসি ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা। অনিয়ম আড়াল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দীর্ঘদিন ধরে বিভ্রান্ত করা হয়। অবশেষে দুর্নীতিবাজ চক্রটির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গোপন প্রতিবেদনে এসব তুলে ধরা হয়। ব্যাংকটির আলোচিত চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল বিগত সরকারের প্রভাবশালীদের বলয়ে শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং তার অনুসারী কয়েকজন চিহ্নিত অপরাধীর সমন্বয়ে বিশেষ বাহিনীর মাধ্যমে কর্মকর্তা ও অংশীজনদের জিম্মি করে অপরাধ ধামাচাপা দেওয়া হতো বলে অভিযোগ ওঠে। সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের ভগ্নিপতি সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে কোনো প্রকার অভিজ্ঞতা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে অনিয়মের বৈধতা দেওয়া হয়। যা দেশের গণমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হতে থাকে।
নতুন করে আলোচনায় বেসিকের বাচ্চু
বেসিক ব্যাংক থেকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার অনিয়মের সন্ধান পাওয়া যায়। বিপুল পরিমাণ টাকা লুটের পরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ৫৮ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত করার আট মাস পরও এই আলোচিত আসামিকে গ্রেফতারের সাহস পায়নি খোদ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অথচ তিনি দেশেই ঘাপটি মেরে বসে ছিলেন। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটিতে রাখা জনগণের কষ্টার্জিত আমানতের টাকা আত্মসাতের নীলনকশা প্রস্তুতকারী বাচ্চুকে গ্রেফতার না করায় তখন নানা সমালোচনা তৈরি হয়। অবশেষে সেপ্টেম্বরে দুদকের করা মামলায় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু ও তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত, পরে সরে আসা
বছরের শুরুতেই আরেকটি আলোচিত ঘটনা ছিল ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত। ব্যাংকখাতে গতি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত এপ্রিল মাসে ব্যাংক একীভূতকরণ সংক্রান্ত নীতমালা জারি করা হয়। এরই অংশ হিসেবে চারটি ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইও হয়। তবে সিদ্ধান্তহীনতায় খোদ দুর্বল ও সবল প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, ছোট ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা হতে পারে। তবে পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে।
ডিজিটাল ব্যাংকিং ও নগদের লাইসেন্স স্থগিত
দেশে প্রথমবারের মতো গত বছরে প্রাথমিকভাবে দুটি ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ দুটি হলো- নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি ও কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি। আর ডিজিটাল ব্যাংকের উইন্ডোর জন্য গাইডলাইন তৈরির পর ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ, ব্যাংক এশিয়ার ডিজিট অল ও ডিজি১০ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংক উইন্ডো খুলতে পারবে বলে সায় দেয়। ডিজি১০ ব্যাংকটি ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সমন্বয়ে প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংক। নগদের ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্স স্থগিত করে পুনরায় পর্যালোচনা করার কথা জানান গভর্নর। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, নগদের ডিজিটাল ব্যাংকিং লাইসেন্স প্রক্রিয়া পুনরায় রিভিউ করা হবে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ
গণমাধ্যমের কাছে বারবার অস্বীকার করলেও অবশেষে গত জুলাইয়ের শুরুতেই নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের হিসাব স্বীকার করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময়ে নিট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৬ দশমিক ০৩ বিলিয়ন ডলার যা গোপন করে আসছিলেন তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বর্তমানে মোট রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম-৬ হিসাবে তা ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। আর দেশের ব্যয়যোগ রিজার্ভ প্রায় ১৫ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ডলার। যা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের বেঁধে দেয়া লক্ষ্য ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়নের চেয়ে সামান্য কম।
আলোচনায় রিজার্ভ চুরির খবর!
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে বলে আবারও সংবাদ প্রকাশ করে ভারতের একটি গণমাধ্যম। গত ১৪ মে নর্থইস্ট নিউজ নামের সংবাদ মাধ্যমটির দাবি, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ হ্যাক করে নিয়ে গেছে ভারতীয় হ্যাকাররা। এ খবর সত্য নয় বলেই দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ খবর বেশ আলোচনার ঝড় তোলে গোটা দেশে। তবে ডলার চুরির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, নতুন করে কোনো রিজার্ভ চুরি হয়নি, খবরটি সম্পূর্ণ ভ‚য়া।
গভর্নরের পলায়ন
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিন দিন দায়িত্বে থাকলেও অফিস করেননি আব্দুর রউফ তালুকদার। শুরু হয় গুঞ্জন, বলা হয় তিনি পলায়ন করেছেন। এর চতুর্থ দিন ৯ আগস্ট দুপুরে অনলাইনে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ১২তম গভর্নর। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই এক রকমের লাপাত্তা ছিলেন, করেননি অফিস, দেখা যায়নি লোক-সম্মুখে। একইভাবে অফিস করলেও পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দুই ডেপুটি গভর্নর ও পলিসি উপদেষ্টা। নিয়োগ দেয়া হয় দুইজন ডেপুটি গভর্নর।
সালমান এফ রহমান ও এস আলমের পতন
একজন নিরীহ, ধর্মভীরু মানুষ হিসেবেই ছিল তাদের পরিচিতি। দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে সালমান এফ রহমানের ইশারায় চলেছে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের দুর্নীতি। সরকারের পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেই সালমান এফ রহমানের পতন হয়। যাকে দরবেশ নামেও চেনেন অনেকেই। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গত ১৬ বছরে দেশের ব্যাংকিং খাত এবং শেয়ারবাজার তছনছ করে দিয়েছেন তিনি ও তার বেক্সিমকো গ্রæপ। নিজের স্বার্থে ঋণ খেলাপির আইন পরিবর্তন করে তার প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা বৈধ করার চেষ্টা করেছেন।
তার মতোই আরেক দরবেশ ছিলেন নাসা গ্রæপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদার। দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ধ্বংসের মূল কারিগর ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ৩০ লাখ ডলার পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নজরুল মজুমদার দুবাই, লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও সৌদিতে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।


সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান এস আলম গ্রæপের কর্ণধার সাইফুল আলম। তিনি একাই প্রায় ১০ ব্যাংক নিজের কব্জায় নেন। করেন লুটপাট ও পাচার। নিজের পিএস, আত্মীয় ও ছেলেদের বসান দখলকৃত ব্যাংকগুলোয়। হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়ে তুলেন সাম্রাজ্য, বড় বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বেনামি ঋণ পাইয়ে দেওয়াদের উপহার দিয়ে ভাসিয়ে দিতেন তিনি। কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিজ এলাকার ১০ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়োগ দেন ব্যাংকে, সরিয়ে দেন দক্ষ কর্মকর্তাদের।
একইভাবে পতন ঘটে সিকদার গ্রুপের। গ্রæপটির পরিচালক রন হক সিদকার ও রক সিকদারের অস্ত্রবাজির মহড়া আর নেই। তাদের হাতে প্রায় ধ্বংস হওয়া ন্যাশনাল ব্যাংক থেকেও তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আলোচনায় ন্যাশনাল ও ইসলামী ব্যাংক
ঋণ জালিয়াতি ও নানা অনিয়মে ধুঁকতে থাকা প্রথম প্রজন্মের ন্যাশনাল ব্যাংক বছর জুড়ে আলোচনায় তুঙ্গে থাকে। সিকদার গ্রæপমুক্ত হয়ে ব্যাংকটির দখল চলে যায় এস আলম গ্রæপের হাতে। এর পর গত ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এস আলম গ্রæপ চলে যেতে বাধ্য হয়। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু। তার বেশ কিছু উদ্যোগে নতুন করে ঋণ আদায় শুরু হয়েছে। একইভাবে ইসলামী ব্যাংককে এস আলমের দখলমুক্ত করা হয়। বিএনপির এক নেতা প্রকাশ্যে গুলি করে এস আলমের দখলে রাখতে ব্যর্থ হয়। দায়িত্ব ফিরে পান সাবেক কর্মকর্তারা। ধুঁকতে থাকা ব্যাংকটির নতুন বোর্ড আবারও চাঙ্গা করে তুলেছে এ ব্যাংকটিকে।
ফের অস্থির ডলার বাজার
আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে আমদানি পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এ চাহিদা বেড়েছে। তবে এর বিপরীতে ডলারের জোগান কম। এ কারণেই অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য ব্যাংকগুলো ১২০ টাকা ঘোষিত দরের চেয়ে কমপক্ষে আট টাকা বেশি দিয়ে রেমিট্যান্স কিনছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারেও।
আর এর সুযোগ নিয়ে একটি অসাধুচক্র খোলাবাজারে ১২১ টাকার জায়গায় ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত ডলার বিক্রি করছে। এতে ডলার বাজার আবারও অস্থির হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ডলার বাজার অস্থিরতার সঙ্গে সন্দেহভাজন অন্তত ১৩টি ব্যাংকের কাছে ডলার বেচাকেনার তথ্য তলব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের অস্থিরতার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মনিটরিং জোরদারের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঋণ অনিয়ম : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাকে তলব
এস আলম গ্রæপ ও তার সহযোগীদের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে দুদক। চিঠিতে যাদের তলব করা হয়- বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সুনির্বাণ বড়–য়া, অনিক তালুকদার, অতিরিক্ত পরিচালক শংকর কান্তি ঘোষ, ছলিমা বেগম, উপপরিচালক মো. জুবাইর হোসেন ও রুবেল চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক সৈয়দ মু. আরিফ-উন-নবী, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মো. শোয়েব চৌধুরী, মো. মঞ্জুর হোসেন খান ও মো. আব্দুর রউফ, উপ-পরিচালক লেনিন আজাদ পলাশ এবং পরিচালক মো. সরোয়ার হোসাইন। এর আগে একই ঘটনায় ইসলামী ব্যাংকের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল সংস্থাটি।
রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে
ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রবাসীরা আগের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে শুরু করেন। এদিকে গত ডিসেম্বরের প্রথম ২১ দিনে দেশে বৈধপথে ২০০ কোটি মার্কিন বা দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার বা এক হাজার ১৪২ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) ১১৩ কোটি ৭৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার, অক্টোবরে ২৪০ কোটি (২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) ডলার এবং সবশেষ নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি (২ দশমিক ২০ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।
আর্থিক খাতে আশা ফিরলেও শৃঙ্খলা ফেরেনি
বাংলাদেশ ব্যাংক রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঠিকমতো দেখভাল করতে পারছে না। এতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে অনেক। রাতারাতি হয়ত এ খাতে পরিবর্তন আসবে না। তবে আশার বাণীও রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আর্থিক খাতে নানা সংস্কারের পাশাপাশি দুর্নীতির অনুসন্ধানে ও নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অর্থপাচারকারীদের খুঁজে বের করার কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ। তিনি জানান, আর্থিকখাতের অনিয়মকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। লুটেরাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।

সর্বশেষ - আইন-আদালত

আপনার জন্য নির্বাচিত

বুধ-বৃহস্পতিবার অবরোধের ঘোষণা দিল বিএনপি

৭৫ পয়সা থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত কমলো জ্বালানি তেলের দাম

অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ

বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অস্ট্রেলিয়ার উচ্চশিক্ষা

দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট বাতিল

‘সমন্বিত উদ্যোগই পারে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা কমাতে’ : চিফ হিট অফিসার

অর্থ উপদেষ্টা ব্যাংকিং খাত সংস্কারে আইএমএফের সহযোগিতা চেয়েছেন

সতর্কতা না দিয়ে বাঁধ খুলে ভারত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

দেশের ২০ অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপূত্র নদের ভাঙন ঝুঁকিতে গুরুত্বপূর্ণ পাগলার বাজার