৮ অক্টোবর ২০২৫, এখন সময় সন্ধ্যা ৭:০৯ মিনিট
শিরোনাম
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কৃষি
  6. খুলনা
  7. খেলাধূলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চট্রগ্রাম
  10. জাতীয়
  11. ঢাকা
  12. তথ্য-প্রযুক্তি
  13. ধর্মতত্ত্ব
  14. প্রকৃতি-পরিবেশ
  15. প্রবাস জীবন

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ৫৪ গ্রাহকের টাকা উধাও : প্রতারণামূলক লেনদেনের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বিবৃতি

প্রতিবেদক
টাইমওয়াচ ডেস্ক
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫ ৬:১০ অপরাহ্ণ

বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক (এসসিবি) বাংলাদেশের গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড থেকে অভিনব কৌশলে টাকা তুলে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা কোনো লেনদেন না করলেও হঠাৎ করেই তাদের কার্ড থেকে প্রতিবারে ৫০ হাজার টাকা করে বিকাশ ও নগদের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর হয়ে যায়। পরে সেখান থেকে দ্রুতই টাকা তুলে নেয় চক্রটি। ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগস্টের শেষ সপ্তাহে এসসিবির ৫৪ জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২৭ লাখ টাকা সরিয়ে নেয় প্রতারকরা। ঘটনার পর ব্যাংকটি কার্ড থেকে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর বন্ধ করে দিয়েছে।
গ্রাহকদের পাঠানো বার্তায় জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে এমএফএস অ্যাপে ‘অ্যাড মানি’ অপশন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। এ ঘটনার পর কয়েকজন ভুক্তভোগী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। হাসিন হায়দার নামের এক গ্রাহক লিখেছেন, তার কার্ড থেকে কোনো কারণ ছাড়াই ৫০ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয় বিকাশে। ফোনে ওটিপি পেলেও সেটি কারও সঙ্গে শেয়ার করেননি। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই টাকা স্থানান্তর হয়ে যায়। তার দাবি, এটি ব্যাংকের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ত্রুটি। আরেক গ্রাহক সাদিয়া শারমিন বৃষ্টি জানান, সাত বছর ধরে কার্ড ব্যবহার করলেও এবারই প্রথম তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তার অ্যাকাউন্ট থেকেও একইভাবে ৫০ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। এসসিবির কর্মকর্তারা বলেন, একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় ও বৈশ্বিক প্রযুক্তি দল নিরাপত্তা যাচাই করেছে। তবে ব্যাংকের সিস্টেমে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। যেহেতু টাকা স্থানান্তর হয়েছে এমএফএস প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, তাই দায়ভার পরিষ্কার করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকেই।বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতারণার মাধ্যমে যেসব বিকাশ ও নগদ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছিল, কয়েক মিনিটের মধ্যেই সেখান থেকে নগদে তোলা হয় এবং পরে অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রমাণিত হয়, ঘটনার সঙ্গে অভিজ্ঞ প্রতারক চক্র জড়িত। প্রতারণামূলক লেনদেনের অভিযোগ প্রসঙ্গে একটি বিবৃতি দিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশ। ২৭ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিবৃতিতে তাদের অবস্থান তুলে ধরে ব্যাংকটি। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, চলতি সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্রেডিট কার্ড থেকে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে একাধিক ওয়ালেট এ প্রতারণামূলক লেনদেনের কিছু অভিযোগ আমাদের সামনে এসেছে। যেখানে কিছু গ্রাহকের অনুমতি ছাড়াই ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) ব্যবহার করে কার্ড থেকে প্রতারণামূলক লেনদেন হয়েছে। এ ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে আমাদের ব্যাংক গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তাৎক্ষণিক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পর্যবেক্ষক দল এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া ও সিস্টেম পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় পরিদর্শন করছে। আমরা ইতোমধ্যেই ঘটনাটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে রিপোর্ট করেছি। আমাদের গ্রাহকদের অসুবিধা এড়াতে, ক্ষতিগ্রস্ত কার্ডগুলোতে সংশ্লিষ্ট অর্থ আমরা ইতোমধ্যেই ফেরত দিয়েছি। তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে, ঘটনাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম ও লেনদেন প্রক্রিয়ার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে দেখা গেছে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং পোর্টাল এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড মোবাইল অ্যাপ সর্বাধিক নিরাপদ, সুরক্ষিত ও এনক্রিপ্টেড পেমেন্ট চ্যানেল হিসাবে গ্রাহক সেবা দিয়ে যাচ্ছে । অ্যাপ বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা সহজেই মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) টাকা স্থানান্তর করতে পারেন। তবে আমরা সাময়িকভাবে এমএফএস পোর্টাল বা অ্যাপ-এ ‘অ্যাড মানি’ ফিচার স্থগিত করেছি, যেন প্রতারক বাইরে থেকে আমাদের গ্রাহকদের ক্ষতি করতে না পারে। ইতোমধ্যে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো নিয়ে আমাদের বেশ কিছু গ্রাহক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের একজন ক্ষতিগ্রস্ত কার্ডহোল্ডার হাসিন হায়দার তার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া শেয়ার করেছেন। আমাদের প্রতিনিধিরা প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানান ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি এই পুরোনো ঘটনা নিয়ে নতুন করে আবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে। আমরা গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, এগুলো পূর্ববর্তী ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং নতুন করে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। এছাড়াও সমস্যার দ্রুত সমাধান এবং মূল কারণ উদঘাটনের জন্য ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করছেন। নাসের এজাজ বিজয় বলেন, দায়িত্বশীল ও বিশ্বস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে, দেশের মানুষের উন্নতির অগ্রযাত্রার অংশীদার হয়ে, গত ১২০ বছর ধরে আমরা গ্রাহকদের পাশে আছি। তাদের আর্থিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের প্রতি আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের অটল আস্থার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

সর্বশেষ - আইন-আদালত

আপনার জন্য নির্বাচিত