বিশ্ব করিম মঞ্জিল দরবার শরীফের প্রধান আধ্যাত্মিক পুরুষ পীরে জামান হযরত মাওলানা শাহসুফি শেখ আব্দুল করিম মাইজভাণ্ডারী প্রকাশ আব্দুল করিম মাওলানার অন্যতম খলিফা মোঃ আব্দুল মজিদ মাইজভাণ্ডারী প্রকাশ আব্দুল মজিদ মাস্টার বার্ধক্যজনিত কারণে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সোমবার রাত ৯ টায় এই নশ্বর পৃথিবী থেকে ওফাত হয়েছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। মৃত্যুকালীন সময়ে তিনি সহধর্মিণী, দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান, রুহানী সন্তান, আত্মীয়-স্বজন ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর সহধর্মিণী নাজমা সুলতানা একজন সুগৃহিণী। এছাড়া তাঁর দুই পুত্র সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান মোহাম্মদ নাজমুল হক দিদল শিক্ষকতা পেশায় কুমুল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত এবং ছোট সন্তান নাইমুল হক বাদল চিকিৎসা পেশায় স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত। তার কন্যা দিলরুবা খানম লিপি বিবাহিত এবং স্বামীর সংসারে গৃহিণী।
বিশ্ব করিম মঞ্জিল দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন হযরত শাহ আলমগীর হোসেন মাইজভাণ্ডারী এক শোক বার্তায় তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন। শোক বার্তায় তিনি বলেন, গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারীর ওসিলায় মহাকালে আব্দুল মজিদ মাস্টার শান্তিতে থাকবেন এই কামনা করি। শোক বার্তায় জানানো হয়, বাধাক্যজনিত কারণে বিশ্ব করিম মঞ্জিল দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন হযরত শাহ আলমগীর হোসেন মাইজভাণ্ডারী তাঁর জানাজা নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তবে বিশ্ব করিম মঞ্জিল দরবার শরীফের প্রধান নির্বাহী এ কে নাহিদ তাঁর জানাজা নামাজে উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল মজিদ মাস্টারের জানাজা নামাজের ইমামতি করেন তাঁরই খলিফা শাহ আব্দুল লতিফ খান মাইজভাণ্ডারী। জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়।
শাহ আব্দুল মজিদ মাস্টার জীবদ্দশায় অমায়িক মানুষ ছিলেন। তিনি ১৯৫০ সালের ৩ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পালড়া গ্রামের এক সম্ভ্যান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম অকিল উদ্দিন এবং মায়ের নাম আজিমুন নেছা। তিনি ১৯৬৭ সালে খাবাশপুর লাবণ্যপ্রভা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। এসএসসি পাশ করে শিক্ষানবিশ অবস্থায় তিনি ১৯৬৮ সালে বনপাড়িল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় নিজকে সম্পৃক্ত করেন। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যান এবং ১৯৭১ সালে সরকারি ঘিওর কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। সবশেষে তিনি একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বনপাড়িল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অবসর নেন। মোঃ আব্দুল মজিদ ১৯৭০ সালে ৭ জানুয়ারি আব্দুল করিম মাওলানার নিটক ‘তরিকায়ে মাইজভাণ্ডারীয়া’য় বায়াত গ্রহণ করেন।
খলিফায়ে বিশ্ব করিম মঞ্জিল আল মাইজভাণ্ডারী শাহ আব্দুল মজিদ মাস্টার পীরের নির্দেশে শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি পল্লী চিকিৎসক হিসেবে দেশের বিশষ করে মানিকগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্য সেবায় যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। এছাড়াও তিনি পীরের নির্দেশে তাশাউফ চর্চা তথা ‘তরিকায়ে মাইজভাণ্ডারীয়া’ প্রচার ও প্রসারে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। দেশ-বিদেশে তাঁর অসংখ্য রুহানি সন্তান তথা ভক্ত-আশেক রয়েছেন।