নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত নিবন্ধন পেয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। দলটি প্রতীক পেয়েছে একতারা। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দলটির নিবন্ধন নং ০৪৯। গত ১০ আগস্ট ২০২৩ বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত নিবন্ধন পেয়েছে বিএসপি। ইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএসপিকে শিগগিরই নিবন্ধন সনদ দেওয়া হবে ।
উল্লেখ্য, নিবন্ধন না দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনে বিএসপির বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ পড়ে । সে আবেদনগুলো সম্প্রতি শুনানিতে না টেকায় নিবন্ধ পেল বিএসপি। এ নিয়ে ইসিতে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৪টি। নিবন্ধনের জন্য এবার ৯৩টি দল আবেদন করেছিল। প্রাথমিক বাছাই শেষে গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ ১২টি দলের মাঠ পর্যায়ের তথ্য যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এই ১২টি দলের মধ্যে শেষ পর্যন্ত দু’টি দলকে চুড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হয়।
৭ আগস্ট ২০২৩ রবিবার নির্বাচন কমিশনে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত এই দলের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানিতে উত্থাপিত বাদী-বিবাদীর যুক্তিতর্ক পর্যালোচনার পর নতুন দল নিবন্ধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন। পৈতৃক সম্পত্তি দখল করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও খানকা দরবার শরীফকে রাজনৈতিক দল হিসেবে উপস্থাপন করায় এবং অন্য দলের নামের সঙ্গে মিল রাখায় বিএসপিকে নিবন্ধন না দেওয়ার আবেদন পড়ে দু’টি। বিএসপি’র বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ করেন দলটির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী’র ছোট ভাই সৈয়দ শহিদউদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ও তার দুই বোন। আর নামের মিল থাকার অভিযোগ তোলেন বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লায়ন আবদুল কাদের জিলানী। এরই আলোকে শুনানি শেষে উত্থাপিত বাদী-বিবাদীর যুক্তিতর্ক পর্যালোচনার পর দলটির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত না হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন দল হিসেবে বিএসপিকে চুড়ান্ত নিবন্ধন দেয় ইসি। সদ্য নিবন্ধন পাওয়া বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী।
সদ্য নিবন্ধিত দলটি ১২ আগস্ট ২০২৩ শনিবার বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করে । সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দলটির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী দেশবাসীকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়ে বর্ণাঢ্য র্যালির যাত্রা শুরু করে। দলটি জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে যাত্রা শুরু করে প্রথমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, এরপর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পৌচ্ছায় এবং বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করে বিশেষ মোনাজাত করে।
যাত্রা শুরুতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের রাজনীতি করার অধিকার রয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএসপি চূড়ান্ত নিবন্ধন পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আমি আজ আমাদের নেতাকর্মীসহ দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করা দরকার। বিএসপি কখনো জনগণের ক্ষতি করে নেতিবাচক ধারা বা সহিংসতার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমাদের মূল স্লোগান ‘ঐক্যের সাথে দেশ গড়ি’।বিএসপি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতীয় সংলাপের বিকল্প নেই। সংলাপ আয়োজনে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র, সুশাসন ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা নিশ্চিতে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিবার্য। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলাসহ সার্বিক পরিবেশ না থাকলে নির্বাচনে যাবে না বিএসপি।